নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। যার মাত্র ০.৯ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় খাতে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। তাদের মতে জাতিকে নেতৃত্ব দেয়া ও দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার কাজটি করে যে সংস্কৃতি, তার জন্য বাজেটে আরো বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন।
অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা দুঃখজনক যে শিল্প খাতে বাজেটের পরিমাণ এত নগন্য। অথচ একটা রাষ্ট্রকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে তার শিল্প ও সংস্কৃতি। ৬০ এর দশকে রাজনৈতিক বিপ্লবের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিপ্লবও হয়েছিল। ওই সময়ে বুলেট-বোমার মত গান-কবিতাও ছিল একটা মারাত্মক অস্ত্র। ৫২, ৬৯, ৭১ থেকে উঠে আসা বাংলাদেশের বাজেটে সংস্কৃতি খাতে এত কম বরাদ্দ ভাবলেই কষ্ট পাই। এমন হত যে, এ রাষ্ট্রের জন্মগ্রহণের প্রক্রিয়ায় শিল্পাঙ্গনের কোনো ভূমিকা ছিলো না, তাহলে মানা যেত এ বাজেট। কিন্তু আমাদের অতীত কিন্তু অন্য কথা বলে। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এ খাতে বাজেট বাড়ানো উচিত।”
সাংস্কৃতিক খাত সমৃদ্ধ হলে একটা রাষ্ট্রের নাগরিকদের ভেতর অপরাধ প্রবণতা অনেক কমে যাবে উল্লেখ করে এ শিল্পী সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, বাজেটের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখার।
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আবুল হায়াত। তিনি বলেন, “এ বাজেট দেয়ার দরকার কী? সরকার ভাবছে আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি বিশ্বের সবচে উঁচুতে উঠে গেছে, তাই হয়তো এ খাতে বাজেটের এ করুন দশা! এর চেয়ে এ খাতটাকে একেবারে উপেক্ষা করে গেলে আরও কম কষ্ট হতো।”
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর তার অত্যন্ত প্রিয়ভাজন উল্লেখ করে আবুল হায়াত বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে নূরকে অনুরোধ করবো বিষয়টি ভেবে দেখার। কারণ শিক্ষা ও সংস্কৃতি একটা জাতির মেরুদণ্ড। এ মেরুদণ্ড সমুন্নত রাখার জন্য সরকার সচেষ্ট না হলে দেশ একটা সময় উঠে দাঁড়াতে পারবে না।”
এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা চম্পার বক্তব্য, “সরকারের উচিৎ সংস্কৃতি খাতে ব্যয় বাড়ানো। প্রতি বছর সরকারি অনুদান দেয়া হয় কিছু সিনেমার জন্য, যেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। আজকে যদি সরকার এ খাতে ব্যয় বাড়ায় তাহলে অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা আরও বাড়বে। সমৃদ্ধ হবে দেশের সিনেমা। আর শুধু সিনেমা কেন, গান, নাটকসহ বিভিন্ন খাতে সরকারি বরাদ্দ থাকা উচিৎ। এতে করে তরুণ সমাজ ধংসের দিকে না গিয়ে শিল্পমুখো হবে। এখন যে ছেলেটা মাদকাসক্ত হচ্ছে, জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে সেই ছেলেটাকেই যদি শিল্পমনা করে গড়ে তোলা যায় তাহলে দেশের লাভ, দেশের জনগণের লাভ। এ সত্য উপলব্ধি আমলে নিয়ে সরকারের উচিৎ এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো।”
দৈনিক দেশজনতা /এমএম
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

