বিনোদন ডেস্ক :
অভিনেত্রী শ্রীদেবীর হঠাৎ মৃত্যুতে শোকাহত তার পরিবার, ভক্ত ও সহকর্মীরা। এ অভিনেত্রীর পরিবারের সদস্যরা এখন প্রিয় মানুষটিকে হারানোর শোক পালন করছেন। দুদিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন চিঠি লিখেছিলেন বনি কাপুর। এবার মাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন জানভি।
ইনস্টাগ্রামে মা, বাবা, বোন খুশি ও তার একাধিক ছবি পোস্ট করেছেন জানভি। পাশাপাশি একটি ছবিতে লেখা রয়েছে মায়ের প্রতি তার ভালোবাসার কথা। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমার বুকের মাঝে অসহ্য শূন্যতা তৈরি হয়েছে, জানি এটা নিয়েই আমাকে বাঁচতে হবে। এই শূন্যতার মাঝেও আমি তোমার ভালোবাসা অনুভব করতে পারছি। আমি অনুভব করছি, তুমি কীভাবে আমাকে সকল দুঃখ ও ব্যথা থেকে আগলে রাখতে। যতবারই চোখ বন্ধ করি, আমার শুধু সুখের স্মৃতিগুলোই মনে পড়ে। আমি জানি তুমিই এটি করছ। তুমি আমাদের জীবনের আশীর্বাদ ছিলে, আমাদের সৌভাগ্য আমরা যতদিন পেরেছি তোমাকে কাছে পেয়েছি। কিন্তু তুমি এই পৃথিবীর জন্য নও। তুমি একটু বেশিই ভালো, পবিত্র এবং ভালোবাসায় ভরপুর। এ জন্যই তিনি তোমাকে নিয়ে গেছেন। কিন্তু আমরা অন্তত তোমাকে পেয়েছিলাম।
আমার বন্ধুরা সবসময়ই বলত আমি স্বতস্ফূর্তভাবে হাসিখুশি থাকি, এখন বুঝতে পারছি এটা তোমার কারণেই ছিল। বলার মতো বড় কোনো সমস্যায় পড়িনি এবং কোনো সময়ই বিরক্ত মনে হতো না কারণ আমার কাছে তুমি ছিলে। তুমি আমাকে ভালোবাসতে। আমার কোনো কিছুর ওপর, কারো ওপর নির্ভরশীল হতে হয়নি কারণ একমাত্র তোমাকেই আমার প্রয়োজন ছিল। তুমি আমার আত্মার অংশ। আমার প্রিয় বন্ধু। আমার সবকিছুর সঙ্গী। সারাজীবন তুমি শুধু দিয়েই গেছো এবং আমিও তোমার জন্য এটি করতে চাই মা। আমি তোমাকে গর্বিত করতে চাই। প্রতিদিন সকালে আশা করি, তুমি আমাকে নিয়ে গর্ব করবে যেমনটা আমি তোমাকে নিয়ে করি। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, এখনো প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এটিই করব। কারণ তুমি এখনো আছো এবং আমি তা অনুভব করছি। তুমি খুশি, বাবা ও আমার মধ্যে রয়েছে। তুমি আমাদের ওপর যে শক্ত প্রভাব ফেলে গেছ এটা আমাদের সামনে এগিয়ে চলার জন্য যথেষ্ট কিন্তু পুরোপুরি নয়।’
পোস্টটির ক্যাপশনে জানভি লিখেছেন, ‘‘আমার জন্মদিনে একটাই চাওয়া, আপানাদের মা-বাবাকে ভালোবাসবেন। তাদের আগলে রাখবেন এবং ভক্তি করবেন যেন তারা ভালোবাসা অনুধাবন করতে পারেন। তাদের কারণেই আপনি পৃথিবীতে এসেছেন। আমি চাইব আমার মাকে ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করবেন এবং প্রার্থনা করবেন, তার আত্মা যেন শান্তিতে থাকে। তার প্রতি আপনাদের ভালোবাসা যেন থেমে না যায় এবং দয়া করে জেনে রাখুন, আমার মায়ের ভালোবাসার একটি বড় অংশ জুড়ে ছিলেন বাবা। তাদের ভালোবাসা ছিল অমর কারণ সেটি পৃথিবীর অন্য কিছুর মতো ছিল না।
তাদের মতো উৎফুল্ল চিত্তে এবং প্রকৃত ভালোবাসা কেউ কাউকে বাসেনি। দয়া করে সেটিকে শ্রদ্ধা করবেন কারণ কেউ যখন এটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে তা খুবই কষ্ট লাগে। এই পবিত্রতা বজায় রাখুন পৃথিবীর কাছে তা যাই হোক না কেন, তবে তা শুধু আমার মায়ের প্রতি নয়, সেই ব্যক্তির প্রতিও যার পুরো পৃথিবী তাকে কেন্দ্র করে ছিল এবং তার দুই সন্তানও এই ভালোবাসার মধ্যে থাকবে।
আমি এবং খুশি আমাদের মাকে হারিয়েছি কিন্তু বাবা তার ‘জান’ হারিয়েছে। তিনি শুধু একজন অভিনয়শিল্পী অথবা মা কিংবা একজন স্ত্রীর চেয়ে বেশি কিছু ছিল। তিনি এসব ক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন। তার কাছে ভালোবাসা দেয়া ও পাওয়া একটি বড় ব্যাপার ছিল। মানুষ হিসেবে তিনি খুবই ভালো ও দয়ালু ছিলেন। তিনি হতাশা, ঈর্ষা ও পরিশ্রীকাতরতা বুঝতেন না। তাকে সেভাবেই থাকতে দিন।
শুধু ভালো দিকটাই দেখুন এবং ভালোবাসা দিন। মৃত্যুর মাধ্যমেও তিনি কিছু দিতে পেরেছেন, এটিই তাকে খুশি করবে। এই সাহস ও অনুপ্রেরণা থেকে আপনাদের মধ্যে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করুন এবং যেকোনো তিক্ততা দূর করুন। মর্যাদা, শক্তি ও সরলতার প্রতীক ছিলেন তিনি। বিগত কয়েকদিন আপনারা যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ। এটি আমাদের শক্তি ও সাহস যুগিয়েছে এবং এর জন্য ধন্যবাদ যথেষ্ট নয়।’’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি