২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৩৯

রাজধানীর রাস্তার বেহাল অবস্থা

যানজটের রাজধানীতে খানাখন্দে ভরা বেহাল সড়ক নাগরিকদের জন্য বড় বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দিয়েছে। নগরীর এমন কোনো এলাকা বোধ হয় পাওয়া যাবে না, যেখানে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হয়নি।
ফলে ছোট-বড় সব রাস্তায়ই এখন সকাল-সন্ধ্যা যানবাহনের জটলা লেগে থাকে। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে অনেক রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে। অনেক সময় বড় বড় গর্তে পড়ে বিকল হচ্ছে যানবাহন। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। এমনিতেই রাজধানীর মালিবাগ-মগবাজার এলাকার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। এসব এলাকায় বসবাসকারী মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই।
যেকোনো উন্নয়নকাজের জন্য সময়ের প্রয়োজন। রাজধানীর সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে কোনোকালেই কোনো সমন্বয় ছিল না। ফলে রাস্তাঘাট যখন-তখন কাঁটা পড়ত। মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভার ও মেট্রো রেলের কাজ শুরু হওয়ার পর ঢাকার সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বড় বড় গর্ত করে ফেলে রাখা হচ্ছে। গর্তে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থার কাজ শেষ হওয়ার পর তা ভরাট করা হচ্ছে। আবার যেসব গর্তে ঢালাইয়ের কাজ করতে হচ্ছে, সেখানে সময় লাগছে বেশি। আবার উন্নয়নকাজ শুরু হওয়ার পর বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে যাওয়ায় কাজের বিলম্ব হচ্ছে। তবে কোথাও যেকোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি নেইÑএমন কথাও বলা যাবে না। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদারককারী সংস্থার নজরদারিকেও দায়ী করা যেতে পারে।
অন্য অনেক সমস্যার পাশাপাশি রাজধানী ঢাকার বড় সমস্যা যানজট। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যায়। হাতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে বের না হলে নির্দিষ্ট সময়ে কোথাও পৌঁছানো অসম্ভব। রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে লেগে যায় দিনের বেশির ভাগ সময়। রাস্তার লেন ব্যবস্থা কিংবা স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালÑকোনো ব্যবস্থাই কোনো কাজে আসেনি। ভোগান্তি দিনে দিনে বেড়েছে, কমেনি। বন্ধ করা যায়নি যেখানে-সেখানে পার্কিং। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাস্তা কাটাকাটি।
উন্নয়নকাজ চলবে। কিন্তু জনভোগান্তির বিষয়টি আগে থেকেই মাথায় রাখতে হবে। একই রাস্তা একাধিকবার কাটার আগে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকলে জনভোগান্তি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। রাস্তা কেটে দীর্ঘদিন ফেলে রাখলে নাগরিকদের কাছেও ভুল বার্তা যায়। এসব বিষয় মাথায় রেখেই উন্নয়নকাজে হাত দেওয়া উচিত। রাজধানীতে মেট্রো রেল চলবে, একাধিক ফ্লাইওভার যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সৃষ্ট যানজট থেকে মুক্ত থাকার কোনো উপায় কি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জানা আছে? এ অবস্থা বাড়তে দেওযা ঠিক হবে না। তাতে জনমনে একধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। উন্নয়নের ফসল জনগণ ভোগ করবে ঠিকই কিন্তু ভোগান্তি কমাতে সচেষ্ট থাকতে হবে সবাইকে। আমরা আশা করব, সব উন্নয়নকাজে গতি আসবে। সব সেবা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর খানাখন্দে ভরা রাস্তাগুলো চলাচলের উপযোগী হবে।

 

প্রকাশ :জুন ১৯, ২০১৭ ৪:০৯ অপরাহ্ণ