২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৫০

সবচেয়ে বেশি নফল রোজা শাবান মাসে

মহিমান্বিত শাবান মাস আমাদের সামনে সমাগত। মাহে রমজানের আগমনি বার্তা নিয়ে আসে শাবান মাস। রমজানের আগাম প্রস্তুতির তাগিদ নিয়ে আসে শাবান মাস। ইসলামের দৃষ্টিতে শাবান মাস বিভিন্ন কারণে বিশেষ গুরুত্ব ও তাত্পর্যপূর্ণ। এ মাসকেই মহানবী (সা.) ‘শাবানু শাহরি’ (শাবান আমার মাস) বলে অবহিত করেছিলেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতেন। রজব ও শাবানজুড়েই তিনি রমজানের অধীর অপেক্ষায় থাকতেন। এর ধারাবাহিকতায় রজবের শুরু থেকেই রাসুল (সা.) দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাজান। ’ (শুআবুল ইমান : ৩৫৩৪)

দোয়াটির অর্থ হলো—হে আল্লাহ, আপনি আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দিন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (রমজান পর্যন্ত আমাদের আয়ু বৃদ্ধি করে দিন, যাতে আমরা রমজানে যথাযথ আমল করতে পারি)। রমজানের আগমনের জন্য মহানবী (সা.) দিনক্ষণ গণনা করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের (দিন-তারিখের হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ রাখতেন, যা অন্য মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩২৫)

মহানবী (সা.) শাবান মাসে অধিক হারে নফল রোজা রাখতেন। হজরত উম্মে সালমা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৩৬)

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি নবী করিম (সা.)-কে শাবান মাসের মতো এত অধিক (নফল) রোজা আর অন্য কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। এ মাসের সামান্য কয়েক দিন ছাড়া সারা মাসই তিনি রোজা রাখতেন। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৩৭)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, রমজানের পর কোন মাসের রোজা সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ? উত্তরে তিনি বলেন, শাবানের রোজা রমজানের সম্মানার্থে। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৬৩) এ ছাড়া শাবান মাসে রয়েছে ফজিলতপূর্ণ একটি রাত। কোরআনের ভাষায় এটিকে ‘লাইলাতুম মুবারক’ আর আমাদের এ অঞ্চলের পরিভাষায় ‘শবেবরাত’ বলা হয়। বিভিন্ন হাদিসে এ রাতের ফজিলতের বিস্তারিত আলোচনা এসেছে। হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। ’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫)

লেখক : ইসলামী চিন্তাবিদ

প্রকাশ :মে ৩, ২০১৭ ৫:৫৪ অপরাহ্ণ