আজ পবিত্র শবে মেরাজ। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে আজ রোববার (২৬ রজব) দিবাগত রাতে সারা দেশে পবিত্র শবে মেরাজ বা লাইলাতুল মিরাজ উদযাপিত হবে।
চাঁদ দেখার হিসাব অনুযায়ী ১৪৪১ হিজরির জামাদিউস সানি মাস ৩০ দিন পূর্ণ হওয়ায় রজব মাসের ২৬ তারিখ আজ (২২ মার্চ)।
‘শব’ বা ‘লাইলাতুল’এর অর্থ রাত, আর ‘মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিবাগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন।
এ রাতে তিনি সপ্তম আকাশে ভ্রমণ করে মহান আল্লাহ তাআলার দিদার লাভ করেছিলেন এবং মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাযের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে ফিরে এসেছিলেন। সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে তাই এটি একটি পবিত্র ও ফজিলতপূর্ণ রাত্রি।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় মুসলিম জাহানের সঙ্গে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও আজ পবিত্র শবে মেরাজ পালন করবেন, ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে দিনটি কাটাবেন।
মেরাজের ঘটনা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে- পবিত্র ঐ মহান সত্ত্বা যিনি রাত্রি বেলায় তাঁর বান্দাকে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশকে আমি বরকতময় করেছি। এটা এজন্য যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাতে পারি। (সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং-১)
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) নবুওয়াতের একাদশ বর্ষের ২৬ রজবের দিবাগত গভীর রজনীতে মহান আল্লাহর খাস রহমতে হযরত জিব্রাঈলের (আ.)সাথে পবিত্র কাবা হতে ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরে ফিলিস্তিনে অবস্থিত পবিত্র বায়তুল মোকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের ওপর সিদরাতুল মুনতাহা, অত:পর সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তা’য়ালার দিদার লাভ করেন এবং সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর রহস্য অবলোকন করেন। সবশেষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে তিনি দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন।
রাসূল (সা.) এর জীবনে সবচেয়ে অলৌকিক ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা এই মেরাজ। ইসলামের ইতিহাসে এমনকি নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সা) ছাড়া অন্য কোন নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। আর এ কারণেই হযরত মোহাম্মদ (সা.) সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী।
মেরাজের রাত খুবই ফজিলতের রাত। এই রাতে যতদূর সম্ভব জেগে নফল নামাজ, জিকির-আযকার, কোরআন তিলওয়াত ও দরুদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ করা এবং নফল নিয়তে দিবা ভাগে রোজা রাখা ভাল। এর বাইরে এই রাতে অন্য কোন প্রকার শরীয়ত বিরোধী রুসম-রেওয়াজে লিপ্ত হওয়া যাবে না।
রজব মাস শুরু হলেই রাসূলে করিম (সা.) এই দোয়া খুব বেশী করে পড়তেন : ‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফী রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রমাদান’। -অর্থ: ‘হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং রমজান শরীফ পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’