বিনোদন ডেস্ক:
‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫’-এর প্রজ্ঞাপন জারি হয় ১৮ মে। সেই থেকে নানান বিতর্ক হচ্ছে। সরাসরি চিত্রনায়ক আলমগীরকে দোষারোপ করলেন সেরা পরিচালকের পুরস্কার পাওয়া মোরশেদুল ইসলাম। এমন অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করলেন নির্মাতা সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড।একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সম্প্রতি মোরশেদুল বলেন, ‘আমার দুইবার জুরি বোর্ডে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি অনেক সদস্য থাকেন যারা ছবি বোঝেন না। আমি এক ভদ্রলোকের নাম সরাসরিই বলব— চিত্রনায়ক আলমগীর। প্রতিবছর উনি জুরি বোর্ডে থাকেন।’মোরশেদুল বলেন, ‘তিনি গতবার নিজেকে নিজে পুরস্কার দিতে চেয়েছিলেন। অতীতেও তিনি নিজেকে পুরস্কার দিয়েছিলেন। কিন্তু গতবার আমার জোরালো ভূমিকার কারণে তিনি পারেননি।’ এছাড়া ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৪’-তে রুনা লায়লার পুরস্কারে আলমগীরের ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। আরো জানান, আলমগীর তার ছবি ‘অনিল বাগচীর একদিন’কে নাম্বার দিয়েছেন অস্বাভাবিক রকম কম। পরে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে সেই ছবিকে পুরস্কারের জন্য আমলে নেয়া হয়।এ সব নিয়ে সোমবার ফেসবুকে মুখ খুললেন ‘গঙ্গাযাত্রা’ চলচ্চিত্রের জন্য পরিচালক ও কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কারজয়ী ডায়মন্ড। তদন্তের পাশাপাশি জানালেন নানা আশঙ্কার কথা।অভিযোগের বিস্তারিত বর্ণনার পর ডায়মন্ড লেখেন, ‘প্রশ্ন উঠে, তাহলে কি মন্ত্রণালয়ের চাপে জুরিবোর্ড মোরশেদুল ইসলামের ছবিকে আমলে নিতে বাধ্য হয়েছে? জুরিবোর্ডে মোট ১৩ জন সদস্যের মধ্যে একজন আলমগীর না হয় অস্বাভাবিক কম নাম্বার দিয়েছিলেন। আরো তো সদস্য ছিলেন তারা নাম্বার কেমন দিয়েছিলেন? একজনের নাম্বারেই কি একটা ছবি বাদ পড়ার কারণ হতে পারে?’ রুনা লায়লাকে পুরস্কার দেওয়া প্রসঙ্গে ডায়মন্ড লেখেন, ‘কিন্তু মোরশেদুল ইসলামের কথা অনুযায়ী তিনিও তো তখন ওই বোর্ডের সদস্য ছিলেন। উনি বলেছেন, আমি জোরালো প্রতিবাদ করেছিলাম। যদিও তার প্রতিবাদ আমরা সেদিন টেলিভিশনে শুনিনি। উনার গোপন তথ্য প্রকাশিত ঘটনাকালে উনি কি সত্যি মুখ খুলেছিলেন? দাবি যখন করছেন তখন নিশ্চয় খুলেছিলেন। কিন্তু প্রতিবাদের পরেও আলমগীরের অন্যায় তিনি প্রতিরোধ করতে পারেননি। এই কারণে ঘৃণায় তিনি পদত্যাগও করেননি। করলে মনে হয় ভালো করতেন। জাতীয় পুরস্কার নিয়ে এমন লুটপাটের কথা সেই সময় তিনি আজকের মত জাতিকে জানাতে পারত। জানালেন না কেন? এটা কি বোর্ডের সদস্য পদে থেকে অনৈতিক কাজে আলমগীরকে সহযোগিতা করার সামিল নয়? রাষ্ট্র এবং জাতি আপনাদের উপর যে গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিল তার কতটুকু আপনারা রক্ষা করতে পেরেছেন? আজ জাতি দেখল, যখন মোরশেদুল ইসলাম মনে করলেন জুরিবোর্ডের কোনো এক সদস্যের কারণে তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তখন গণমাধ্যমের সামনে এসে অকপটে প্রকাশ করলেন তার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক গঠন করা জুরিবোর্ডের যত সব নোংরামির ইতিহাস। জাতির প্রশ্ন, মোরশেদুল ইসলামও তো কখন কখন জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন তাহলে তাঁদের এই রকম অনৈতিক আচারণের কারণে কতজনকেই না জানি ন্যায় বিচার থেকে তথা জাতীয় পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে, সেটা কি বলবেন? যাদের হাতে ক্ষমতা নাই তারা আপনাদের হাতে চিরদিন বঞ্চিত হবে, কেননা ওরা জুরিবোর্ডের কোনো সিদ্ধান্তকে রিকল করানোর ক্ষমতা রাখে না।’ তার মতে, মোরশেদুল ইসলামের কথায় প্রকাশ হয়েছে আংশিক গোপন কথা। সরকারের পক্ষ থেকে এর নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া খুব জরুরি। এ প্রসঙ্গে জাতি আলমগীরের কথাও শুনতে চায়। অন্যদিকে মোরশেদুল ইসলামের অভিযোগ যদি সত্য হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব রুনা লায়লার উচিত হবে জাতীয় পুরস্কার সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ