২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:০৪

নগ্ন শিল্পী লক্ষ্মীর সংগ্রামের গল্প রঙিন সিনেমায়

বিনোদন ডেস্ক:

ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা লক্ষ্মী। গত ৩০ বছর ধরে নগ্ন শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। মুম্বাইয়ের স্যার জেজে স্কুল অব আর্টে কেটে গেছে তার এ ৩০ বছর। নগ্ন হয়ে বিভিন্ন ঢঙে বসে থাকাই তার কাজ। তারই অবয়ব পাথরে কিংবা কাঠের গায়ে ফুটিয়ে তোলে জেজে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

লক্ষ্মীর সংসার ছিল, সন্তান ছিল। আর পাঁচটা নারীর মতোই তার জীবন। কিন্তু এতে ছন্দপতন ঘটে হঠাৎ তার স্বামী মারা যাওয়ার পর। পরিবার ও সন্তানের খরচ জোগাতে বাধ্য হয়ে নগ্নতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন লক্ষ্মী। নগ্নতার বিনিময়ে যা পেতেন তাই দিয়ে খরচ চালাতেন পরিবারের। লক্ষ্মীর এই সংগ্রামী জীবন-কাহিনী নিয়ে সিনেমা তৈরি করেছেন ভারতীয় পরিচালক রবি যাদব।

তরুণী বয়সে স্বামীকে হারিয়ে কীভাবে একজন নারী ‘নগ্নতা’কে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সেই গল্পই উঠে এসেছে এ সিনেমায়। মুক্তি নিয়ে তীব্র আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছে রবি যাদবের ‘নগ্ন’। আগামী ২৭ এপ্রিল সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

সিনেমা মুক্তির খবর পাওয়ার পর লক্ষ্মী তার নগ্ন শিল্পী হিসেবে জীবন-যাপনের কঠিন সংগ্রামের গল্প তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী যখন মারা যায়, তখন আমার বড় সন্তানের বয়স মাত্র তিন বছর। আমার জীবনের কঠিন এই সময়ে হন্যে হয়ে কাজের সন্ধান করেছি; যাতে আমার সন্তানের ভরণ-পোষণ চালাতে পারি।’

লক্ষ্মী তার কঠিন জীবনের শুরুর গল্প জানান। তিনি বলেন, ‘আমাকে কাজ দেয়ার জন্য প্রত্যেক দিন অামার চাচী রাজাম্মাকে অনুরোধ করতাম। কিন্তু তিনি কোনো সাড়া দিতেন না। একদিন বিকেলে চাচীর কর্মস্থল জেজে স্কুলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে জানতে পেলাম, তিনি নগ্ন শিল্পী হিসেবে কাজ করেন।’

‘তখন তিনি (চাচী) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন- নগ্ন শিল্পী হিসেবে কাজ করবে তুমি? তাহলে আমি তোমার জন্য কথা বলতে পারি।’

শুরুর দিকে প্রত্যেক নগ্ন হয়ে এক সেশনে বসে থাকার জন্য ৫০ রূপি পেলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৫০০ থেকে এক হাজার রূপিতে পৌঁছেছে।

দুই সন্তানের জীবন বাঁচাতে কঠিন এই পথ বেছে নেয়ার সময়ের কথা স্মরণ করে লক্ষ্মী বলেন, ‘ওই সময়, আমার খুবই প্রয়োজন ছিল একটি কাজের। আজও প্রথম দিনের কথা আমার মনে পড়ে; যখন অনেক অনেক পুরুষের চোখের সামনে নিজের শরীর থেকে সব কাপড় খুলে ফেলি। সেই সময় আমি একেবারে ভেঙে পড়ি। কিন্তু জেজে স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা আমার এ পথচলায় অনেক সহায়তা করেছে।

‘আজ আমি বলতে পারি, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কাজটাই আমি করছি।’

সূত্র : ডিএনএ ইন্ডিয়া।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :মার্চ ১০, ২০১৮ ৬:১৫ অপরাহ্ণ