২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:২৯

বিলেত সেরা শ্রাবণী

স্পোর্টস ডেস্ক:

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শ্রাবণী আক্তার বসবাস করেন যুক্তরাজ্যে। শ্রাবণীর ভারোত্তোলনের শুরু স্কুলশিক্ষকের আগ্রহে। এরপর একে একে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে থাকলেন ভারোত্তোলনের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। এবার তো বাজিমাত, যুক্তরাজ্যের জাতীয় যুব ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে সেরা হলেন কলেজপড়ুয়া শ্রাবণী।

কে ভেবেছিল একদিন ভারোত্তোলনই হবে তাঁর ধ্যানজ্ঞান। অবিরাম অনুশীলনে সময় কাটবে ব্যায়ামাগারে। আবার প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে তিনিই কিনা সবাইকে চমকে দেবেন জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এসব তো তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি। কিন্তু বাস্তব মাঝেমধ্যে স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে যায়। এই যেমন গেল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত  যুক্তরাজ্যের শ্রাবণী আক্তারের বেলায়।

শ্রাবণী আক্তার যুক্তরাজ্যের জাতীয় যুব ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে ভারোত্তোলনে দেশসেরা হয়েছেন । অথচ তাঁর ভারোত্তোলনে হাতেখড়ি একেবারে অপ্রত্যাশিত, স্কুলের এক শরীরচর্চা শিক্ষকের আগ্রহে। এখন শ্রাবণীর কৃতিত্ব বিলেতে বাংলাদেশিদের সাফল্যের ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। নতুনদের গর্ব করার মতো অনুপ্রেরণার গল্প। সে গল্প শুনতেই ২৬ ফেব্রুয়ারি কথা হয় শ্রাবণী আক্তারের সঙ্গে। আলাপে উঠে এল তাঁর এগিয়ে চলার অন্তরালের কথা। শ্রাবণীর বাবা বাহাউদ্দিনও রসদ জোগালেন সে আলাপে।

চমকে দেওয়া বিজয়

লন্ডন থেকে লুটন শহরের দূরত্ব প্রায় ২০০ মাইল। সেদিন এ পথেই শ্রাবণীকে নিয়ে পা বাড়িয়েছিলেন বাবা বাহাউদ্দিন। এ শহরেই বসেছিল যুক্তরাজ্যের যুবাদের নিয়ে ‘ব্রিটিশ ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপ-২০১৮’ নামের ক্রীড়া আসর। লন্ডন থেকে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার পথে বাবার মাথায় বারবার ঘুরপাক খাচ্ছিল, ‘ও পারবে তো?’

দিনটা ৩ ফেব্রুয়ারি। শহরের সুবিশাল মিলনায়তন ‘ভেন্যু ৩৬০’-তে আয়োজন। ভারোত্তোলন পর্ব শুরু হতেই বাবার স্নায়ুচাপ আরও বাড়ল। কারণ, বাকি প্রতিদ্বন্দ্বীরা বেশভূষায় বেশ সাহসী।

শ্রাবণী বলছিলেন, ‘সব মিলে ছয় পর্বের পাঁচটাতেই আমি শীর্ষে ছিলাম। চূড়ান্ত পর্বে মোট প্রতিযোগী ছিলাম তিনজন। আমি সর্বোচ্চ ৬৬ কেজি ভার উত্তোলন করেছিলাম।’ ঘোষণা করা হলো, শ্রবণী আক্তার চ্যাম্পিয়ন। বাবা বাহাউদ্দিনের চোখ তখন অশ্রুসিক্ত। তিনি বললেন, ‘শ্রাবণীর চ্যাম্পিয়ন হওয়া দেখে আমি তখন অভিভূত। বাকিরাও অবাক।’

লুটন শহরের চূড়ান্ত পর্বে যাওয়ার আগে শ্রাবণী আক্তারকে লন্ডন যুব প্রতিযোগিতা (লন্ডন ইয়ুথ গেমস) পাড়ি দিতে হয়। গত বছরের জুনে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়ে তিনি জাতীয় প্রতিযোগিতার টিকিট পেয়েছিলেন। যাঁরা দুই ধরনের ভারোত্তোলনে কমপক্ষে ৯৫ কেজি উত্তোলন করতে পেরেছেন, তাঁরাই জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর

প্রকাশ :মার্চ ৪, ২০১৮ ৩:০৯ অপরাহ্ণ