২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:৪০

পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলার শর-ঈ বিধান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আল্লাহতাআলা পবিত্র জীবন ব্যবস্থা ইসলামে পর্দার বিধানকে ফরজ করেছেন। তাই প্রতিটি মুসলিম নারী-পুরুষের ওপরই পর্দার বিধান মেনে চলা অবশ্য কর্তব্য। তাই জানা প্রয়োজন, পর্দা করে এমন নারী কি অপরিচিত কোনো পুরুষের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, কিংবা উচ্চস্বরে কথা বলতে পারবেন? এ বিষয়ে ইসলামের বিধান কি? আল্লাহতাআলা বলেন, ‘হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সঙ্গে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না। ফলে সেই ব্যক্তির মনে কুবাসনা জাগে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে।’ (সুরা-আহযাব, আয়াত-৩২)

বিধান হচ্ছে, কেবল প্রয়োজনবশত কোনো নারী অপর পুরুষের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। তবে এ সময় নারীর কথার স্বর এমন হতে হবে যাতে পরপুরুষের মনে কোনো প্রকার কামনা-বাসনা না জাগতে পারে। তার বলার ভঙ্গিতে কোনো নমনীয়তা থাকবে না, তার কথায় কোনো মনমাতানো ভাব থাকবে না। সে সজ্ঞানে তার স্বরে মাধুর্য সৃষ্টি করবে না, যা শ্রবণকারী পুরুষের আবেগকে উদ্বেলিত করে তাকে সামনে পা বাড়াবার প্ররোচণা দেবে ও সাহস যোগাবে। বরং কথা বলার সময় সে পূর্ণ সতর্কতার সঙ্গে অনমনীয় স্বরে গাম্ভীর্যতা নিয়ে কথা বলবেন।

এ ধরনের কথাবার্তা সম্পর্কে আল্লাহ পরিষ্কার বলেন, এমন কোনো নারীর পক্ষে এটা শোভনীয় নয়, যার মনে আল্লাহর ভয় ও অসৎকাজ হতে দূরে থাকার প্রবণতা রয়েছে। অন্য একটি আয়াতে আল্লাহতাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আর যখন সে (মুসা আলাইহিসসালাম) মাদয়ানের কূপের কাছে পৌঁছল, সে দেখল, অনেক লোক তাদের পশুদের পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের থেকে আলাদা হয়ে একদিকে দুটি মেয়ে নিজেদের পশুগুলো আগলে রাখছে। মুসা মেয়ে দুটিকে জিজ্ঞেস করল, তোমাদের সমস্যা কি? তারা বলল, আমরা আমাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান করাতে পারি না যতক্ষণ না এ রাখালেরা তাদের জানোয়ারগুলো সরিয়ে নিয়ে যায়, আর আমাদের পিতা একজন অতি বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি।’ (সুরা-আল কাসাস, আয়াত-২৩)

একটি বিষয় হচ্ছে, ইসলামী বিধানে নারীদের জন্যে কোমল স্বরে কথা বলাই নিষিদ্ধ। বিনা প্রয়োজনে পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলা পর্যন্ত নিষিদ্ধ। দুঃখ-কষ্ট-আনন্দ, দারিদ্র্য-ধনাঢ্যতা, জয়-পরাজয়, শক্তিমত্তা-দুর্বলতা, সুস্থতা-রুগ্নতার মতো সব অবস্থায় আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করছেন। তিনি দেখছেন, ভালো অবস্থায় ব্যক্তি অহংকারী, অত্যাচারী ও আল্লাহ বিস্মৃত হয়ে প্রবৃত্তির দাস হয়ে যায়, নাকি আল্লাহর আনুগত্যে স্থির থাকে এবং শোকরগুজার হয়। খারাপ অবস্থায় হিম্মত ও সাহস হারিয়ে হীন ও অবমাননাকর পদ্ধতি বা অবৈধ কোনো পন্থা অবলম্বন করে অবাধ্য হয় নাকি আল্লাহর হুকুম পালনে অটল ও অবিচল থাকে। কাজেই কোনো বুদ্ধিমান ব্যক্তির এ সমস্ত অবস্থা বোঝার ব্যাপারে ভুল করা উচিত নয়। সে যে অবস্থারই সম্মুখীন হোক, তাকে অবশ্যই পরীক্ষার এ দিকটি সামনে রাখতে হবে এবং সাফল্যের সঙ্গে একে অতিক্রম করতে হবে।

নারী-পুরুষ একে অপরের জন্যে বড় পরীক্ষার ক্ষেত্র। সুতরাং উভয়ের বিষয়ে উভয়কে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। মহামহিম আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের সমস্ত বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। নিশ্চয়ই এর মাঝেই আছে দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ-শান্তি ও সফলতা।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮ ১২:০০ অপরাহ্ণ