ইসলাম ডেস্ক:
সমাজবদ্ধ জীবনে সমস্যাপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইমানের দাবি। বিশেষ করে সমাজে যারা ঋণগ্রস্ত তাদের ঋণ পরিশোধে সহায়তা করা অথবা নিজের পাওনা মওকুফ করে দেয়া অনেক বেশি সওয়াবের কাজ। সাধারণ দান-সদকার চেয়েও এই ঋণ সহায়তা মহৎ কাজ। সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মুখ খুলে মানুষের কাছে কিছু বলতে পারে না; কারো কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাততে পারে না। কিন্তু তাদের অবস্থা খুবই করুণ, অথচ কেউ তাদের খবর নিতে আসে না। এমন ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানোর সওয়াব বেশি।
রাসুল (সা.) বলেন, এক ব্যক্তি মানুষকে ঋণ দিত। তার পর সে প্রদত্ত ঋণ আদায় করতে একজন আদায়কারী পাঠাতো। আদায়কারীকে সে বলে দিত যে, অত্যধিক অভাবী কোনো ব্যক্তি পেলে তাকে মাফ করে দিও। হয়তো এর কল্যাণে আল্লাহ আমাদেরও মাফ করে দেবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, এই লোকটি যখন আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হলো, তখন আল্লাহ তার গোনাহ মাফ করে দিলেন। (বুখারি ও মুসলিম) অন্য হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করলে যার আনন্দ লাগে, সে যেন দরিদ্র ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় অথবা তার ওপর থেকে ঋণের বোঝা একেবারেই নামিয়ে দেয়। আবু সাঈদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত, একদিন রাসুল (সা.) এক লোকের জানাজা পড়াতে গেলেন। এ সময় তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের এই সাথীর (মৃত ব্যক্তির) ওপর কি কোনো ঋণ আছে?
লোকেরা বললো, জ্বি, ঋণ আছে। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন: সে কি কোনো সম্পত্তি রেখে গেছে, যা দ্বারা এই ঋণ পরিশোধ করা যায়? লোকেরা বললো: না। তখন রাসুল (সা.) এই জানাজা পড়াতে অস্বীকৃতি জানালেন। অবশেষে আলী (রা.) এগিয়ে এলেন এবং তার ঋণের দায়িত্ব নিলেন। তখন রাসুল (সা.) আলীকে (রা.) উদ্দেশ্য করে বললেন, হে আলী, তুমি যেভাবে নিজের এই মুসলিম ভাইয়ের ঋণের দায়িত্ব গ্রহণ করে তাকে রক্ষা করলে, সেভাবে আল্লাহ তায়ালা তোমাকেও দোজখ থেকে রক্ষা করুন। যে কোনো মুসলমান নিজের মুসলমান ভাইয়ের ঋণ পরিশোধ করে দিলে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে দোজখ থেকে মুক্তি দেবেন বলে রাসুল (সা.) বলেছেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ