স্বাস্থ্য ডেস্ক:
হুট করে হাঁচি আসলো আর সবার সামনে হা করে দিয়ে দিলেন একটা হাঁচি। সেটা অবশ্যই আপনার জন্য উপকারি কিন্তু আপনার উপকার যে অন্যের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এটা কখনো ভেবে দেখেছেন? সেটা ভেবে দেখার আগে এটা ভেবে দেখুন আমাদের কেনো হাঁচি আসে? আমাদের দেহে যখনই কোনো ক্ষতিকর রোগের জীবাণু ঢুকে যায় তখন সেই জীবাণু আমাদের দেহ থেকে দ্রুত বের করে দেয়া হয় হাঁচির মাধ্যমে। আর অনেকই হয়তো জানেন না যে হাঁচির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১00 কিলোমিটার। আপনি যখন হাঁচি দেন তখন বাতাসে ঘণ্টায় ১00 মাইল বেগে ছুটে চলে সংক্রামিত তরলের ছোট্ট ফোঁটা। হাঁচি থেকে বের হওয়া সেই ফোঁটাগুলো ৬ ফিট দূরত্ব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। আর যখন আপনি মুখের সামনে রুমাল, কাপড়, হাত বা কোনো প্রোটেকশন ছাড়া হাঁচি দিচ্ছেন তখন সেটা আপনার আশেপাশে ৬ ফিটের মধ্যে বসে থাকা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাই একবার চিন্তা করে দেখুন আপনার একটু বে খেয়াল অন্যের কতো বড় ক্ষতি করে দিচ্ছে।
হাঁচির সময় করণীয়:
. একটি রুমাল হাতে রাখুন এবং নাক ও মুখের সামনে ধরে হাঁচি দিন।
. হাঁচি আসলে সব সময় চেষ্টা করুন মাথা নিচের দিকে রেখে হাঁচি দিতে।
. সাথে রুমাল না থাকলে পোশাকের কলারের (গলা) ভিতরে নাক মুখ ঢুকিয়ে হাঁচি দিন।
. যদি রুমাল বাহির করতে নাও পারেন তাহলে আপনার পোশাকের হাতা নাকে মুখে চেপে ধরুন।
. যদি তাও না পারেন তাহলে আপনার বাম হাতের তালু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে হাঁচি দিন। তারপর . . রুমাল অথবা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন। এভাবেই আপনি পরবর্তী হাঁচিকে ম্যানেজ করতে পারবেন।
. হাঁচি দেয়ার পরে আপনার হাত ভালো মতো পরিষ্কার করুন।
আরো কিছু সর্তকতা:
. কখানোই হাঁচি আটাকানো চেষ্টা করবেন না। এতে আপনার আরো ক্ষতি হতে পারে।
. খুব বেশি শব্দ করে হাঁচি দিলে সেটা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
. নাকের সামনে রুমাল ধরে প্রাণভরে হাঁচি দিন। কিন্তু যথাসম্ভব কম শব্দে হাঁচি দিন।
. হাতের কাছে রুমাল বা টিস্যু না থাকে, তাহলে দুই হাতে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দিন এবং পরে . . . দ্রুততম সময়ে হাত ধুয়ে ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করে নিন।
. তবে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
হাঁচি নিয়ে কিছু তথ্য:
. সাধারণত প্রাপ্তবয়স্করা বছরে ৩-৪ বার আর নাবালকরা বছরে ৬-১০ বার সর্দি-কাশিতে ভোগেন।
. সর্দি হতে পারে ২০০-র বেশি ভাইরাস থেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ভাইরাসদের বলা হয় হিউম্যান রাইনোভাইরাসেস (এইচআরভি)। এর মাধ্যমেই ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে যেকোনো রকম সর্দি লাগে।
মাত্র একদিনে এই ভাইরাস ১.৬ কোটি সন্তান উৎপাদন করতে সক্ষম।
. সংক্রামিত স্থান স্পর্শ করার পরে নাক বা চোখ ছুঁলে সর্দি লাগে। তুলুনামুলকভাবে মুখ দিয়ে সর্দির ভাইরাস শরীরে ঢোকে কম।
. সর্দিতে আক্রান্ত কেউ হাঁচিলে দিলে বা কাশলে, তার শরীর থেকে বের হওয়া সংক্রামিত তরলের অতি ক্ষুদ্র ফোঁটা হাওয়ায় ভাসে। নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় কোনোভাবে সেই বাতাস নাক দিয়ে টেনে নিলে সর্দি অবধারিত।
তাহলে এবার থেকে হাঁচি দেয়া সময় শুধু নিজের স্বাস্থ্যে কথা চিন্তা করলেই হবে না। আপনার আশেপাশের মানুষের কথাও একটু চিন্তা করে নিবেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ