২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:১৩

অতিরিক্ত ওজন ও ঘুমের সমস্যা কমাতে তিনটি পানীয়

 স্বাস্থ্য ডেস্ক:

ওবেসিটি এবং ঘুমের সমস্যা অথবা ইনসমনিয়া- দুটোই খুব মারাত্মক বাজে প্রভাব ফেলে দেয় একজনের জীবনের উপরে। এই দুইটি আলাদা আলাদা সমস্যার বাজে প্রভাব এতোটাই বেশি হয় যে, অনেক সময় স্বাভাবিক জীবন যাপনের প্রক্রিয়াও ব্যহত হতে শুরু করে। এখন একবার ভাবুন তো, এই দুইটি সমস্যা যদি একসাথে কারোর মাঝে দেখা দেয় তবে তার শারীরিক অবস্থা কতোটা বিপর্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। ওবেসিটি এখনকার সময়ের অনেক বড় একটা শারীরিক সমস্যা। ওজন বেশি হবার কারণে ঘুমের উপরেও তার প্রভাব পড়ে, ফলে ঘুম নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। তাই, ওবেসিটি এবং ঘুমের সমস্যা, দুটো পরস্পরের সাথে একসাথে সংযুক্ত।

যে কারণে, শুধুমাত্র একটা সমস্যার চিকিৎসা করে কখনো পুরোপুরি সেই সমস্যাটি ঠিক করা সম্ভব হয় না। বরং, দুটো সমস্যাকে একক হিসেবে ধরে একসাথে চিকিৎসা করলে এবং উপকারী খাদ্য ও পানীয় খেলে সমস্যা কমে আসে অনেকখানি।

আজকের ফিচার এমন তিনটি পানীয়ের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে, যা একইসাথে ওবেসিটি এবং ঘুমের সমস্যা সমাধানে কাজ করে থাকবে।

দুধ, জায়ফল এবং মধু দিয়ে তৈরি পানীয়

ঘুমাতে যাবার আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করলে যে কাররোই ঘুম হবে শিশুদের মতো শান্তিময়! তবে দুধ পান করা নিয়ে অনেকের মাঝেই একটা ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই ভেবে থাকেন দুধ পান করার ফলে ওজন অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু এই ধারণাটি একেবারেই ভুল। বরং নিয়মিত দুধ পান করলে ওজন কমতে সাহায্য করে থাকে। দুধে থাকে অ্যামিনো এসিড, যা ঘুমকে প্রভাবিত করতেও সাহায্য করে থাকে। আর ছোটবেলা থেকে আমাদের সকলেরই নিশ্চয় মধু খাওয়া হয়, যা ঘুমের জন্যে খুবই উপকারী। মধু প্রশান্তিময় এবং শান্তিময় ঘুমের জন্যে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে থাকে। এর সাথে জায়ফল ঘুমের ঘাটতি কিংবা ইনসমনিয়ার জন্যে ঘরোয়া উপাদান হিসেবে খুবই কার্যকরি উপাদান।

বিশেষ করে যখন দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয়, তখন খুব দারুণ কাজ করে। জায়ফলে থাকা অধিক মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম নার্ভের টেনশন কমাতে সাহায্য করে এবং সেরোটনিন নিঃসৃত করতে সাহায্য করে থাকে। যা দারুণ একটি ঘুম এনে দেওয়ার জন্যে চমৎকার কার্যকরি।

যেভাবে তৈরি করবেন:

এক কাপ গরুর দুধের সাথে, ১-২ চা চামচ মধু এবং এক চিমটি জায়ফল গুঁড়া দিয়ে একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে পান করে নিন।

শসা, আদা এবং লেবুর পানীয়:

শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খুব নমনীয় আঁশ, যার সাথে রয়েছে ফ্যাটি এসিড। যা আপনার প্রতিদিনের পরিপাককৃত খাদ্যদ্রব্য থেকে বাড়তি ফ্যাট সরিয়ে নিতে সাহায্য করে থাকে। অপরদিকে আদা শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্যে এবং খাদ্য দারুণভাবে পরিপাক করতে সাহায্য করে, এবং সবশেষে লেবু আপনার শরীরকে ডিটক্সিফাইড করার জন্যে খুবই উপকারী একটি উপাদান। যা স্ট্রোক এর সম্ভবনা কমিয়ে আপনার হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।

এই চমৎকার তিনটি উপাদান দিয়ে তৈরি পানীয় যদি প্রতিদিন রাতে আপনি পান করেন, তবে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী হতে পারে একবার ভাবুন তো!

যেভাবে তৈরি করবেন:

শসা এবং আদা কুচি করে ব্লেন্ড করে নিন। এর সাথে পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে এক চা চামচ পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে খেয়ে ফেলুন।

চেরি এবং অ্যালোভেরার পানীয়

বাংলাদেশে যদিও খুব একটা প্রচলতি নয় চেরি ফল, কিন্তু এর সকল পুষ্টিগুণ স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই উপকারী। চেরি ফলের রস মেলাটোনিন এর মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে ইনসমনিয়ার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এবং ঘুমের স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।

এই পানীয়ের আরেকটি উপাদান অ্যালোভেরার গুণের কথা না বললেই নয়। অ্যালোভেরাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়বেটিসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে থাকে। একইসাথে এটি রক্তের গ্লুকোজ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তবে, অ্যালোভেরা যেহেতু ল্যাক্সেটিভ উপাদান সমূহ রয়েছে, তাই একটু বুঝেশুনে এবং পরিমাণ মতো খেতে হবে।

যেভাবে তৈরি করবেন:

চেরি ফলের রস এবং অ্যালোভেরার রস অথবা জেল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পাতলা করে নিন। এবার পানীয়টি পান করার জন্যে তৈরি।

 

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :অক্টোবর ১, ২০১৭ ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ