২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:৩০

সংসার মানে সমঝোতা-বোঝাপড়া, ঝগড়া বা যুদ্ধ নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অবাধ যৌনাচারের পর সভ্যতার প্রারম্ভে বৈধভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন ও সন্তান জন্ম দিয়ে লালন পালনের মতো মৌলিক কিছু উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পরিবারের উৎপত্তি। পরিবার হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষুদ্র এবং একক একটি প্রতিষ্ঠান। দুইটি ভিন্ন লিঙ্গের নর নারীর সমন্বয়ে গড়ে উঠে এই পরিবার। ইদানীং যদিও সমলিঙ্গে বিবাহ হচ্ছে, অগ্রসর পৃথিবীর কোথাও কোথাও এর স্বীকৃতি পর্যন্ত আছে, তবে অধিকাংশ ধর্মীর মতবাদে এই প্রথাকে অনৈতিক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তবে প্রবল আধুনিক এই যুগে সমাজ এগিয়েছে অনেক দূর।

পরিবারের মূল উদ্দ্যেশ্য যদি বৈধভাবে সন্তান জন্মদান হয় তবে এই সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়ে আর বেশিদূর আলোচনার কিছু নেই। ধরে নিলাম এটা নিতান্তই আমাদের ব্যক্তিগত অভিরুচি। সমস্যা হলো এই ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ আমাদের এতো বেশি ও আমরা দিন কে দিন এতোটাই আত্নকেন্দ্রীক হয়ে যাচ্ছি যে কেউ কাউকে সম্মান করতেও কিঞ্চিৎ ছাড় দিচ্ছি না। আমরা এখন সবাই “বিচার মানি কিন্তু তাল গাছটা আমার” মতবাদে বিশ্বাসী।

ঘটনাঃ ১

আনোয়ার একজন ব্যস্ত গাড়ি চালক। গুলশানের একটি অভিজাত বাইং হাউজের ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কাজের চাপ প্রচুর, তাই পরিবারকে খুব একটা সময় দিতে পারেন না। পড়াশোনা খুব বেশি করেছেন, তা নয়। অষ্টম কি নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন বলে জানা যায়। অভাবের সংসার, কারণ আয় রোজগার যে খুব ভালো তা কিন্তু নয়। পোশাক শিল্পে কাজ করেন, তাই শিডিউল খুব টাইট। রাত বিরাতে ফ্যাক্টরি যেতে হয় মারচেন্ডাইজার, কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর, কথনো বা বায়ার কে নিয়ে।

শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, ঈদ, পার্বণ যাই আসুক, ছুটি একদম ঘড়ির কাঁটার মতোই মেপে চলতে হয়। একদিন সকাল বেলায় আমার কাছে এসে বললেন, ‘স্যার আমার ছেলেটা অসুস্থ, যদি আজ ছুটি দেন’। আমি তখনো বিয়ে করিনি, কিন্তু সন্তানের জন্য পিতার এই অনুভূতি আমাকে ভীষণ স্পর্শ করেছিল। আমি একটা গাড়ি ভাড়া নিয়ে তাকে ছুটি দিয়েছিলাম। কাজের চাপে ভুলেই গিয়েছিলাম আনোয়ারের ছোট্ট ছেলেটার কথা। সন্ধ্যায় ফোন করে আনোয়ার কাঁদছিল, জানতে পারলাম ওর ছেলেটা মারা গেছে। মনটা খুবই ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো। ছুটলাম ওর বাসায়…

জুরাইনের একদম শেষ প্রান্তে একটা টিনশেডের ঘরে ওদের সপরিবারে বসবাস, আমরা সংসার বলি যাকে। জানতে পারলাম ছয় মাস বয়েসি ছেলে জন্ডিসে আক্রান্ত ছিল। ডাব পড়া খাইয়ে তাবিজ কবজ নিয়েছিলো পরম বিশ্বাসে। কিন্তু কবিরাজের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে মৃত্যুর কাছে আত্নসমর্পণ করেছিল নাম ভুলে যাওয়া শিশুটি। আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এই পরিবারের জন্য কিছু একটা করব।

অফিস থেকে একটা পিক-আপ কেনা হচ্ছিল, অনেক আগ্রহী প্রার্থী, বিশেষ করে মালিকপক্ষের লবিং এর প্রার্থী ছিল প্রচুর। কিন্তু ঝুঁকি নিয়েই আমি আনোয়ারকে গাড়ির চাবি বুঝিয়ে দিয়ে দিলাম। আনোয়ার আমার চেয়ে বয়সে বড় হলেও সেদিন সালাম করতে এসেছিলেন। আমি বাধা দিয়ে শুধু এতোটুকুই বলেছিলাম, ‘এই চাকরিটা আমি আপনার ছেলেটার জন্য তোমার পরিবারকে দিয়েছি। স্ত্রীকে কষ্ট দিয়েন না, আরেকটা সন্তান নিয়ে সুখে থাকেন। কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে জানিয়েন, সাধ্যমতো সাহায্য করব।’

মাস কয়েক পর সেই আনোয়ারের স্ত্রী আফিসের নিচে এসে কাঁদছে, আমার সাথে দেখা করতে চায়। কী সমস্যা জানতেই কেঁদে অস্থির। ‘স্যার, উনি তো বাসায় আসেন না আজ দুই মাস, শুনেছি বিয়ে করে বাড্ডায় থাকেন।’ আমি কিছুতেই মেলাতে পারছিলাম না সেই আনোয়ারের সাথে, যার ছেলে হারানোর কান্না আমাকে ভীষণ স্পর্শ করেছিল। খোঁজ নিয়ে জানলাম, তিনি নতুন বউ নিয়ে সুখেই আছেন। আর জুরাইনের যে বউ এর সাথে পরিচয় হয়েছিল, উনি তার তৃতীয় স্ত্রী।

ঘটনাঃ ২

দীপ্ত ও নীলা গোটা ক্যাম্পাসের সবচেয়ে ঈর্ষা জগানিয়া জুটি ছিল। দীপ্ত ভীষণ ভালো ছাত্র আর নীলা অপূর্ব সুন্দরী, ছাত্রী হিসেবেও খারাপ নয়। পড়াশোনা শেষ করে দীপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়েই যোগ দেয় শিক্ষক হিসেবে। বছর দুয়েক পর থেকেই যেখানে নবীন শিক্ষকেরা স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশ পাড়ি জমাতে চায়, সেখানে দীপ্ত ব্যাতিক্রম। স্ত্রীকে সময় দেয়ার জন্য দেশেই রয়ে গেলো, কারণ তাদের সন্তান পৃথিবীতে আসছে।

এই দীপ্ত বছর খানেকের মাথায় হুট করেই ইউরোপে চলে যায় পিএইচডি করার জন্য, কিন্তু নীলা দেশেই রয়ে গেল। মায়াবতী নীলার মুখ মলিন দেখাচ্ছিল। যাবতীয় সামাজিক যোগাযোগ থেকেই দীপ্ত নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখলেন। বছর তিনেক পর ফিরে এলে, নীলা সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, নতুন বাসা ভাড়া নেয়। নীলা তখন একটি বহুজাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেন। তবে নীলার শাশুড়ি এবার একটা উদ্যোগ নিয়ে নীলাকে বাসায় ফিরিয়ে আনেন, কিছু শর্তে রাজি হয়ে। নীলা থাকবে তাদের ভবনে একটি আলাদা ফ্ল্যাটে, বাসার যাবতীয় বাজার, চাইলে রান্না পর্যন্ত যাবে শ্বশুর বাড়ি থেকে। উদ্দেশ্য একটাই, ঝামেলা যাই হোক, তা যেন নিজেদের মধ্যেই থাকে, শুধু শুধু লোক হাসিয়ে লাভ কি?

কিছুদিনের মধ্যেই তাদের ছেলের ভীষণ অসুস্থতায় তারা এক ছাদের নীচে থাকা শুরু করলো আলাদা হয়েই, শুধু ছেলের মানসিক তৃপ্তির জন্য। এভাবেই কোন একটা অজানা উপায়ে দুজনের মধ্যে সমস্যা মিটে যায়, তারা এখন সুখেই বসবাস করছে একসাথে। ওদের মধ্যে সমস্যা হয়েছিলো নিশ্চিত, আবার মিটেও গেছে। মজার বিষয় হলো কি হয়েছিল তাদের মধ্যে আমরা আজও জানি না। আমি তাদের এই ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও ফিরে আসাকে শ্রদ্ধা জানাই।

ঘটনাঃ ৩

মালা। বাসায় কাজ করেন। স্বামী পরিত্যক্তা, দুটি সন্তান আছে, থাকেন নানীর সাথে গৌরীপুরে। স্বামীর সাথে বনিবনা হয়নি কেন? জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত জবাব এলো, ‘কীসের আবার বনিবনা, ভাতই দেয় না।’ অর্থাৎ স্বামী ভাত না দিলে আবার সংসার চলে কেমনে? তাই নিজের কাঁধেই নিতে হলো সংসারের ভার। মাসে মাসে বিকাশে করে টাকা যায় গ্রামের বাড়ি, ওখানে তার দুটি মেয়ে আছে যে…

মেয়ে না হয়ে যদি দুটি ছেলে থাকত, তাহলে কি মালার স্বামী বাচ্চাদের ফেলে যেতো? মনে হয় না। মেয়েদের জন্ম মানেই দিন মজুর স্বামীর কাছে বাড়তি খরচা, শুধুই বিনিয়োগ, কোন রিটার্ন নাই। শুনেছি প্রথম মেয়ে হলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘পরেরটা মাইয়া হইলে কিন্তু আমি নাই’। হলোই তাই।

কেন ভাঙে ঘর? একটা গান আছে না, ‘কি আশায় বাঁধি খেলাঘর, বেদনার বালু চরে’। আমাদের সবারই মনে একটা অবাধ্য অভিমান বাস করে। কখনও কখনও এই অভিমান বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতোই ছুটে চলে সব কিছু ভেঙেচুরে। সংসার একজন দিয়ে হয় না, এটা দুজনকেই দেখতে হয়। এটা অনেকটা টিমওয়ার্ক এর মতো, একা খেলা যায় না, দুজনকেই খেলতে হয়, তা না হলে অন্তত সমর্থন। কেই কারো প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং পরিপূরক। কলম ও কালি একত্রিত না হলে যেমন লেখা যায় না, তেমনি গিটারের তার ছিড়ে গেলে সুর উঠে না।

ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব, অযৌক্তিক চাওয়া পাওয়া, এমন কি ভারতীয় জনপ্রিয় সিরিয়ালের পাখি ড্রেস না পেলেও এখন সংসার ভাঙে, এমন কি আত্নঘাতী পর্যন্ত হচ্ছে কেউ কেউ। খুলনার একজন রিকশা চালক স্ত্রীর আবদার মানতে গিয়ে ঈদের আগে পর্যাপ্ত টাকা যোগাড় করে পাখির মতো পোশাক কিনতে ব্যর্থ হলে তালাক হয়ে যায় তাদের।

ইদানীং পরকিয়ার গুঞ্জন শুনা যায় যেখানে সেখানে। আদাবরের শিশু সামিউল কে খুন করেছিলেন মায়ের অবৈধ প্রেমিক। বিচার চলছিল, মায়ের ও প্রেমিকের সাজাও হয়ে যেত তথ্য প্রমাণ অনুযায়ী। কিন্তু সামিউলের বাবা কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে যখন ভীষণ একা, তখন সেই স্ত্রীকেই ছাড়িয়ে আনেন জেল থেকে। আজব আমাদের ভালোবাসা, নাকি কোন রকমে বেঁচে থাকা?

আলোচিত ঐশী হত্যা করে বাবা মাকে। নিম্ন আদালতে ফাঁসি হলেও উচ্চ আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায়। যেমন সে ছিলো তখন মাদকাসক্ত, অপরিণত বয়স, বাবা মায়ের অবহেলাইয় সঠিক ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠেনি ইত্যাদি। অর্থাৎ খুনের জন্য তারা নিজেরাও পরোক্ষভাবে দায়ী ছিলেন।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বেশ কিছু আদিবাসী ও সম্প্রদায় এখনো মাতৃ প্রধান পরিবারের ধারায় পরিচালিত হয়।গারো আদিবাসী ও বেদে সম্প্রদায় তাদের মধ্যে অন্যতম। গারো নারীরা বিয়ের পর মায়ের বাড়িতে নিয়ে আসে স্বামীকে, নারী বাইরে কাজ করে, ফসল ফলায়, বাজারে বিক্রি করে আর স্বামী সন্তানদের দেখাশোনা ও ঘর সামলায়। বেদে ছেলেরা নাকি এখনো প্রথা অনুযায়ী বিয়ের আগ মুহূর্তে গাছে চড়ে বসে, হবু স্ত্রী তাকে আশ্বাস দেয় ভাত কাপড়ের, সংসার চালানোর, তবেই তিনি গাছ থেকে নেমে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন।

আমাদের দেশে বিশেষ করে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বাবারা সংসারের খরচ যোগাড় করত আর মায়েরা সংসার পরিচালনা করত। সময়ের বিবর্তনে এখন মায়েরাও কর্মজীবী হচ্ছে। এতে সংসারে স্বচ্ছতা আসছে, সংসারে মায়েদের গুরুত্ব বাড়ছে। মায়েরা আত্ননির্ভরশীল হচ্ছেন। এটা আমাদের সামজিক উন্নয়নের সূচকের জন্য ভীষণ ভালো খবর। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নেয়া পোশাক খাতের সিংহভাগ শ্রমশক্তি আসে মায়েদের কাছ থেকে। পথে মাঠে ঘাটে মায়েরা এখন দিনমজুরের কাজও করে থাকে, যদিও তাদের ন্যায্য পাওনা দেয়া হয় না, অন্তত পুরুষের সমান মজুরি তারা পাচ্ছে না। প্রতিকূলতার কথা তো আর বলে শেষ করা যাবে না…

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রবাসী থাতে মায়েদের অংশগ্রহণ নিয়ে এখন ব্যাপক সমালোচনা, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার কোনভাবেই নারীবান্ধব নয়। তার পরেও একজন মা ঘর ছাড়েন সংসারের উন্নতিকে মাথায় রেখেই। তার পরেও আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে ভেঙে যাচ্ছে পরিবার, ব্যাপক হারে। তারকা থেকে শুরু করে নগর বন্দর গ্রাম সর্বত্রই এইহার ব্যাপক ভাবে বেড়ে যাচ্ছে। একসময় যে স্বামী ভাত না দিলে স্ত্রী বাপের বাড়ি আসতো বাধ্য হয়ে, সেখানে স্ত্রীরাই তালাক দিচ্ছে স্বামীদের আর এই হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজ বিশেষ করে ভেঙ্গে যাওয়া সন্তানদের জন্য এটা অশনি সংকেত…

ভারতীয় দুটি বাংলা ছবি বেলা শেষে ও প্রাক্তন এর ঘটনা পরিক্রমা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বেলা শেষে ছবিতে পড়ন্ত বয়সে এসে একজন পৌঢ় তার স্ত্রীকে ত্যাগ করার ইচ্ছের কথা জানায় ছেলে মেয়ে, পুত্রবধূ ও জামাইদের সামনে। স্ত্রী ভীষণ অপমানিত বোধ করলেন, হতবাক হলেন। স্বামীর অনুযোগ, স্ত্রী তার বিশেষ যোগ্য নয়, তিনি খুক একটা বেশি জানেন না, দুনিয়ার হালচাল, কীভাবে চলে, ব্যাংকিং কীভাবে করতে হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ছাড়াছাড়ি হবার আগে তারা কিছুদিন আলাদা থেকে বুঝলেন আসলে তারা কেউ কাউকে ছাড়া চলতেই পারবেন না, বিশেষ করে অভিমানী স্বামীটি। অবশেষে তিনি ফিরে এলেন, আশ্রুসজল নয়নে স্ত্রী তখন বলছিলেন, আমার আগে যেন তোমার মৃত্যু হয়, কারণ তোমাকে ছাড়া আমি চলতে পারলেও আমাকে ছাড়া তুমি চলতেই পারবে না। এছাড়াও ছেলে মেয়েদের সংসারেও ছিল ভাঙনের সুর। এ যেন আমাদের চলমান জীবনের বাস্তব প্রতিচ্ছবি…

প্রাক্তন ছবিতে একজন টুরিস্ট গাইড স্বামীর সাথে স্থপতি স্ত্রীর পরিচয় হয়েছিলো ভ্রমণ করতে গিয়ে। তারপর তুমুল প্রেম ও বিয়ে, কিন্তু বনিবনা হয়নি। পরিশেষে বিচ্ছেদে মুক্তির স্বাদ। কিন্তু গল্পের দ্বিতীয় প্রধান নারী চরিত্রটি একেবারেই ঘরোয়া একটি আটপৌড়ে বাঙালি নারীর। তিনি ট্রেনে যাত্রার সময় তার আত্নীয় স্বজনদের সাথে ফোনে কথা বলে হলেও সম্পর্কটাকে ঝালাই করে ধরে রাখছিলেন। কাজের চাপে পরিবারকে সময় না দেয়া সেই টুরিস্ট গাইড স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রীর পরোক্ষ আবদারে নিজেকে বদলে ফেলেন। সাবেক ও বর্তমান স্ত্রীকে নিকে একই কেবিনে করে ট্রেন যাত্রার এই ছবিটি সত্যিই দারুণ…

বিচ্ছেদ কোন সমাধান নয়। তবে জোড়াতালি দিয়েও সংসার চলে না। বেসুরো গান কেউ পছন্দ করে না, অর্থাৎ শুনতে ভালো লাগে না। প্রয়োজন সময় নেয়া, ভেবে কাজ করা। অন্যের উপর আধিপত্য মানেই বিজয় নয়, কখনও পরাজিত হয়েও বিজয়ী হওয়া যায়। ত্যাগ করার মানসিকতা রাখতে হবে দুজনকেই। আমাদের ভূলের জন্য সন্তানদের ভবিষ্যত কেন অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত হবে? সংসার মানে সমঝোতা, বোঝাপড়া, ঝগড়া বা যুদ্ধ নয়…

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জুলাই ৩১, ২০১৭ ১:৫৩ অপরাহ্ণ