ডায়রিয়া নামে অসুখটি দীর্ঘদিন ধরে ভোগালেও এটা আদৌ অসুখ কি না, তা নিয়ে সম্প্রতি কিছু নতুন তথ্য পেশ করেছেন আমেরিকার বস্টনের ব্রিগাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটালের একটি গবেষক দল। তাদের মতে, ডায়রিয়া আদতে ক্ষতিকারক জীবাণু বা ‘প্যাথোজেন’ শরীর থেকে বার করে আমাদের রোগপ্রতিরোধক্ষমতাকে সচল রাখতেই সাহায্য করে।
ওই গবেষণার ফল গত বুধবার প্রকাশিত হয়েছে ‘সেল হোস্ট অ্যান্ড মাইক্রোব’ পত্রিকায়। তাতে বলা হয়েছে, শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বা ‘ইমিউন মেকানিজমে’র জন্যই ডায়রিয়া হয়।
আমাদের অন্ত্রের দেয়ালে থাকা কোষগুলির মধ্যে ছোট ছোট ফাঁক এবং গর্ত থাকে। পুষ্টিকর পদার্থ, পানি, আয়ন এবং বর্জ্য এগুলোর মধ্যে দিয়েই অন্ত্রের এক অংশ থেকে আরেক অংশে যায়। ওই গবেষক দলের পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটলে এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র গর্তগুলোর ভেদ্যতা অনেকাংশে বেড়ে যায়। এটা ঘটায় ‘ক্লডিন ২’ নামে প্রোটিন। এই ভেদ্যতাবৃদ্ধির ফলে অন্ত্রে সোডিয়াম এবং পানি ঢুকে সেখান থেকে প্যাথোজেন বার করে দেয়। এর ফলেই ডায়রিয়া হয়।
জেরল্ড টার্নারের নেতৃত্বে গবেষণার ফলাফল গত বুধবার প্রকাশিত হয়েছে ‘সেল হোস্ট অ্যান্ড মাইক্রোব’ পত্রিকায়। তাতে বলা হয়েছে, ডায়রিয়া প্রকৃতই খাদ্যনালী থেকে রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু বের করে কি না, তা নিয়ে বহুদিন ধরেই বিজ্ঞানীদের সংশয় ছিল। গবেষণাগারে ইঁদুরের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ‘সিট্রোব্যাক্টার রোডেনশিয়াম’ জীবাণুর (ই কোলাই জীবাণুর সঙ্গে তুল্য) সংক্রমণ ঘটিয়ে ওই গবেষকেরা দেখেছেন, ইঁদুরের অন্ত্রও কীভাবে ডায়রিয়ার মাধ্যমে ওই জীবাণু শরীর থেকে বার করে দেয়। টার্নার জানিয়েছেন, ইঁদুরের উপরে পরীক্ষা করে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলেও তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, মানুষের ক্ষেত্রেও যে এমনটাই হয়।