২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:৩৪

হয়রানির উদ্দেশ্যেই দুদককে লেলিয়ে দিয়েছে সরকার: মাহমুদুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দৈনিক আমার দেশ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তার স্ত্রী আমার দেশ পাবলিকেশন্স লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজা মাহমুদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুদকের অভিযোগ ও মামলাকে সম্পূর্ণ বেআইনি,ভিত্তিহীন এবং হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করেছেন।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন যে, সরকার তার পুরো পরিবারকে ধ্বংস করার জন্য সর্বশেষ স্ত্রী ফিরোজা মাহমুদের বিরুদ্ধে দুদককে লেলিয়ে দিয়েছে। দুদক সম্পদের তথ্য গোপনের বানোয়াট অভিযোগে ১১ জুন মামলা করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমাজচিন্তক ফরহাদ মজহার,সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, আব্দুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ইলিয়াস খান, কাদের গণি চৌধুরী ও ইঞ্জিনিয়ার নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমূখ।

মাহমুদুর রহমান দুদকের অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, দুদকের দাবি ফিরোজা মাহমুদ ২০০৩ সালে রেজিস্ট্রিকৃত তার গুলশানের এপার্টমেন্টের মূল্য ৬০ লাখ টাকা কম দেখিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এপার্টমেন্টটি যে জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে তার মালিক ছিলেন মরহুম ফজলুর রহমান। এপার্টমেন্ট নির্মাণ করেছে র‌্যাংগস প্রপার্টিজ লিমিটেড। এপার্টমেন্টের মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার অর্থাৎ রাজউক। রাজউক সরকারি পত্রের মাধ্যমে র‌্যাংগস এর এমডি রোমো রউফ চৌধুরীকে এপার্টমেন্টের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই পত্রের প্রেরক এবং প্রাপক যথাক্রমে রাজউক এবং রোমো রউফ চৌধুরী। এই মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ফিরোজা মাহমুদেও কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তা সত্ত্বেও কেবল তারই বিরুদ্ধে দুদক উদ্দেশ্যমূলক এ মামলা দিয়েছে।

এ ধরনের হয়রানীমূলক মামলা রাজউকের লীজভুক্ত প্রতিটি জমি অথবা এপার্টমেন্টের মালিকের বিরুদ্ধে করা হলে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরো জানান, র‌্যাংগস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোমো রউফ চৌধুরী গুলশান অঞ্চলের সাব রেজিস্ট্রারের নিকট হলফনামা দিয়ে নিশ্চিত করেছেন, এপার্টমেন্টের মূল্য কম দেখানো হয়নি। এই হলফনামা প্রদানেও ফিরোজা মাহমুদের কোনো রকম ভুমিকা নেই। তিনি কেবল হলফনামার ভিত্তিতে এবং রাজউক নির্ধারিত মূল্যে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। একজন ক্রেতা যদি কোনো দোকান হতে সরকারি সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত মুল্যে কোনো পণ্য ক্রয় করেন, সেক্ষেত্রে কেবল ত্রেুতার বিরেুদ্ধে মামলা করার আইনগত ভিত্তি নেই।

সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান বলেন, ফিরোজা মাহমুদ একজন সিআইপি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বছরে প্রায় এককোটি টাকা আয়কর দিয়ে আসছেন। আয়কর বিভাগের ২০১৫-১৭ বর্ষের প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, ফিরোজা মাহমুদ উক্ত বছরে আয়কর প্রদান যথাযথভাবে সম্পন্ন করেছেন। আরেকটি প্রত্যয়নপত্রে আয়কর বিভাগ উল্লেখ করে যে,২০১৩-১৪ আয়কর বছরের সমুদয় কর ফিরোজা মাহমুদ পরিশোধতো করেছেনই,সর্বোপরি উক্ত বছর পর্যন্ত তার কাছে সরকারের আর কোনো পাওনা নেই। সেক্ষেত্রে ২০০৩ সালের রেজিস্ট্রিকৃত এপার্টমেন্টের মূল্য বিষয়ে দায়ের করা মামলাটি শুধু হয়রানির জন্যই করা হয়েছে।

মাহমুদুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার স্ত্রী ফিরোজা মাহমুদ প্রতি বছর প্রায় এক কোটি টাকা আয়কর প্রদান করেন। যে ব্যক্তি বছরে এক কোটি টাকা আয়কর দেন, তিনি সম্পদের মূল্য ৬০ লাখ টাকা কম দেখিয়ে কীভাবে লাভবান হতে পারেন সে বিষয়টি দেশবাসী বিবেচনা করবেন। এ ধরনের উদ্ভট অভিযোগ বিশ্বে কেবল বাংলাদেশেই করা সম্ভব। এ সরকার এর আগে আমার বিরুদ্ধে ৮১টি হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে। আমাকে ৫ বছর জেলে রেখেছে। ৩৮দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালিয়েছে। আমার ৭৯ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা অধ্যাপিকা মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। এবার আমার স্ত্রীকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। আমি সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই, কোনো কিছুতেই আমার কন্ঠরোধ করা যাবে না। সরকারের কাছে আবারো চ্যালেঞ্জ,সততায় আমার সঙ্গে পারবেন না।

দৈনিক দেশজনতা /এমএম

প্রকাশ :জুন ১২, ২০১৭ ৯:১৫ অপরাহ্ণ