ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্য সরকার ব্রেক্সিট পরবর্তী নিজেদের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। ‘সস্তা শ্রমে’র ধারণা থেকে সরে আসছে সরকার। বরং সস্তা শ্রমের পরিবর্তে কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি উন্নয়নের ওপর বেশি মনোযোগ দিবে সরকার।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন এ পরিকল্পনার আওতায় আগামী ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ও ইউরোপের বাইরের নাগরিকদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করা হবে না।
বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যে কেউ নাগরিক বিনাশর্তে ইংল্যান্ডে যেকোনো কাজ করতে পারে। কিন্তু আগামী ৩১ ডিসেম্বর ব্রেক্সিট কার্যকর হলেই এ সুবিধা বাতিল হবে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। দলটির মতে, ‘বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশে’ বিদেশি শ্রমিকদের আকর্ষণ করা কঠিন হবে। এছাড়া এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ইংল্যান্ডের নাগরিকদের মধ্যে অভিবাসীদের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি হতে পারে।
স্কটল্যান্ডের মন্ত্রী এবং এসএনপি দলের নেতা নিকোলা স্টার্জন বলেন, সরকারের নতুন পরিকল্পনা স্কটিশ অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
কিন্তু বিবিসিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে যোগ্য মেধাবীরা ইংল্যান্ডে আসতে বেশি উৎসাহিত করবে। ফলে যুক্তরাজ্যে কম যোগ্যতাসম্পূর্ণ অভিবাসীদের সংখ্যা কমে যাবে।
যোগ্য কারা
সরকারের নতুন পরিকল্পনায় যারা এ লেভেল অথবা স্কটিশ হাইয়ার সমমানের ডিগ্রি অর্জন করেছে, তারাই যোগ্য বিবেচিত হবেন। কৃষি কাজের সাথে যারা যুক্ত শ্রমিকরা বাদ যাবে। কাঠ, প্রলেপ দেয়া সম্পর্কিত কাজের শ্রমিকরা নতুন যোগ্যতার আওতায় পড়বেন।
সরকার কিভাবে যোগ্যতা নির্ধারণ করবে?
২০১৯ সালে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল ঘোষণা দিয়েছিল, তারা ‘পয়েন্টে’র ভিত্তিতে অভিবাসন প্রক্রিয়া চালু করবে। অভিবাস শ্রমিকদের ১০০ মধ্যে ৭০ পয়েন্ট পেতে হবে। ইংরেজিতে কথা বলা এবং ইংল্যান্ডে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার ভিত্তিতে কাজের অনুমোদন থাকলে সে শ্রমিক ৫০ পয়েন্ট পাবে।
বেতনের হার
সরকার জানিয়েছে, দক্ষ শ্রমিকদের বেতন হবে ন্যূনতম ২৫ হাজার মার্কিন ডলার থেকে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, অভিবাসীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত আয়-সংক্রান্ত সুবিধা ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা পাবে না। বর্তমানে সাধারণত ৫ বছর ধাকার পর অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে অনির্দিষ্টকাল থাকার অনুমতি পান।
বরিস জনসন সরকার অভিবাসন নিয়ে তাদের এ নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেও পার্লামেন্টের সদস্যদের অনুমোদন ছাড়া এটি কার্যকর হবে না।