দেশের রপ্তানি খাতে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে নতুন এক মাইলফলক। এই প্রথম ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত স্মার্টফোন আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড ওয়ালটনের তৈরি স্মার্টফোন যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
জানা গেছে, আমেরিকার একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ওয়ালটনের কাছ থেকে স্মার্টফোন নিচ্ছে। ওরিজিনাল ইক্যুপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার (ওইএম) হিসেবে ওই ব্র্যান্ডটিকে স্মার্টফোন তৈরি করে দিচ্ছে ওয়ালটন। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটনের তৈরি স্মার্টফোনগুলো আমেরিকার বাজারে বিক্রি হবে।
আগামী ১ মার্চ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আমেরিকায় স্মার্টফোন রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
এ সময় আরো উপস্থিত থাকবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল আলম বলেন, প্রযুক্তি পণ্যে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ছিল দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। ২০১৭ সালে ওয়ালটনের মোবাইল ফোন কারখানা উদ্বোধনের মাধ্যমে সে স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পায়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে তৈরি অত্যাধুনিক ফিচারের স্মার্টফোন দিয়ে ক্রেতাদের মন জয় করে নিয়েছে ওয়ালটন। উৎপাদনকারী হিসেবে প্রথম স্থান দখল করে আছে। এবার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক বাজার। সে লক্ষ্যের শুরুতেই আমেরিকার মতো উন্নত দেশে যাচ্ছে বাংলাদেশে ওয়ালটনের তৈরি স্মার্টফোন। পর্যায়ক্রমে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশেও রপ্তানি হবে স্মার্টফোনসহ ওয়ালটনের তৈরি বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য।
উল্লেখ্য, এর আগে আমেরিকার বাজারে ইলেকট্রনিক্স এবং আইসিটি পণ্য বিক্রির জন্য বিশ্বখ্যাত ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের সঙ্গে চুক্তি করে ওয়ালটন। খুব শিগগিরই ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, কমপ্যাক্ট মিনি রেফ্রিজারেটর, হোম অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন পণ্য অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও আইসিটি পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে ওয়ালটন এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে। এসব দেশে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা ওয়ালটন কম্প্রেসর, ফ্রিজ, এসি, টিভি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন পণ্য সুনাম কুড়িয়েছে। যার ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে। একই সঙ্গে আমদানি নির্ভরতা হ্রাস এবং রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়া। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া। সে লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন।