দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেছেন, মামলা দিয়ে আমাকে থামানো যাবে না। জনগণ পাশে আছে। জয় আমাদেরই হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর দয়াগঞ্জ মোড় থেকে সপ্তম দিনের নির্বাচনী প্রচার শুরুর সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের আহত করা হয়েছিল, ভাইস চেয়ারম্যানদের গুলি করা হয়েছিল, এমপি ক্যান্ডিডেটদের রক্তাক্ত জখম করা হয়েছিল। সেই বাধাই আমরা মানিনি। এখন আবার পুরনো মামলায় সচল করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের কোনোভাবেই থামানো যাবে না। আমরা কোনো বাধাই মানব না।
প্রসঙ্গত বুধবার ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম বিএনপির এই মেয়রপ্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় ২০১০ সালে ইশরাকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
এ প্রসঙ্গে ইশরাক বলেন, আমার কাছে নতুন করে সম্পদ বিবরণী চাওয়া হয়নি। আমার কাছে সম্পদ বিবরণী চাওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন আমার বয়স মাত্র ১৮ বছর। তখন আমি একজন ছাত্র। থাকতাম দেশের বাইরে। ওই সময়কার সেনা সমর্থিত সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করার উদ্দেশ্যে এই সম্পদ বিবরণীর নোটিশ দিয়েছিল।
তিনি বলেন, পরে ২০১০ সালে যখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমার বাবা যুক্ত হন, তখন আমার বাবার ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য আমার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার এ মামলাটি করে। তার পর এই মামলার কোনো গতিবিধি ছিল না। ২০১৮ সালে যখন আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করি, তখন তড়িঘড়ি করে এই মামলার চার্জশিট অনুমোদন করা হয়।
এই মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। তবে অবশ্যই এটি নতুন করে নাড়াচাড়া করছে সরকার রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ ইশরাককে দমাতে চাইছে অভিযোগ করে বিএনপির এ প্রার্থী বলেন, প্রত্যেক দিন আমাদের জনসমাগম বিপুল পরিমাণে বেড়েই চলছে। এই জনস্রোতে ভেসে যাবে সব। কোনো কিছু আমাদের আটকাতে পারবে না। সরকার এই জনস্রোত, গণজোয়ার দেখে ভিত। তারা নানা অপকৌশল-কূটকৌশল করছে এবং নানা রকম বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
‘আমি বলে দিতে চাই– কোনো কিছু কাজ করবে না। জনগণের স্রোতে সব ভেসে যাবে। ভোট ডাকাতির ইভিএমও কাজ করবে না। এই যে জনস্রোতটা সৃষ্টি হয়েছে, গণজোয়ার তৈরি হয়েছে- এটি যেন অব্যাহত থাকে। কোনো কিছুতেই আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। আপনারা আপনাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবেন। আমরা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে আন্দোলন শুরু করেছি, সেটিকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে যাব। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব’— বলেন ইশরাক হোসেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, কেন্দ্রীয় নেতা নবীউল্লাহ নবী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটিতে ভোট হবে। এবারই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হচ্ছে দুই সিটির প্রতিটি কেন্দ্রে।