২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:১৪

খাশোগি হত্যায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদির কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার মামলায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর তিনজনকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরবের একটি আদালত।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সোমবার দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর রায়ের কথা জানান।

পাবলিক প্রসিকিউটর আরো জানান, খাশোগি হত্যার মামলায় সৌদি রাজপরিবারের সাবেক এক শীর্ষ উপদেষ্টার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি এবং তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে জামাল খাশোগির হত্যার ঘটনা স্বীকার করে সৌদি আরব। দেশটির প্রধান কৌসুলি বিবৃতিতে বলেছিলেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে কনস্যুলেটের মধ্যেই হত্যা করা হয়েছে।

এর আগে তুরস্ক সরকার মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেছিল যে তাদের হাতে অডিও এবং ভিডিও প্রমাণ রয়েছে যে, সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটের ভেতর খুন করা হয়েছে।

মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, এসব রেকর্ডিংয়ে দেখা যাচ্ছে সৌদি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা কনসুলেটের ভেতরে জামাল খাশোগিকে আটক করেছে, তারপর তাকে হত্যা করেছে এবং তার দেহকে খণ্ড-বিখণ্ড করেছে।

বিশেষভাবে অডিও রেকর্ডিং থেকে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সৌদি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের যোগসাজশের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা বলেছিলেন।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা, যিনি এই অডিও এবং ভিডিও সম্পর্কে জানেন, তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছিলেন, ‘জামাল খাশোগি কনসুলেটের ভেতরে ঢোকার পর সেখানে কী ঘটেছিল তার একটা ধারণা ওই অডিও রেকর্ড থেকে জানা যাচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি শুনতে পাবেন তাকে (জামাল খাশোগিকে) জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে এবং পরে খুন করা হচ্ছে।’

তুর্কি কর্তৃপক্ষ অন্য যে মার্কিন কর্মকর্তাকে এই প্রমাণ দেখিয়েছে, তিনি বলছেন এসব রেকর্ডিং থেকে জামাল খাশোগিকে মারধরের প্রমাণ মিলেছে।

জামাল খাশোগি এক সময় সৌদি রাজপরিবারের খুব ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। কিন্তু বর্তমান সৌদি সরকার এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচনা করে তিনি সংবাদপত্রে লেখা ছাপিয়েছেন। তিনি ওয়াশিংটন পোস্টের একজন নিয়মিত কলামিস্ট ছিলেন।

ওয়াশিংটন পোস্টের ওই খবরে বলা হয়েছে, খাশোগি নিখোঁজ হওয়ার সাথে সাথেই তুরস্ক কেন সৌদি আরবকে দোষারোপ করেছে এসব প্রমাণ থেকে তার একটা ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে।
খাশোগির কনস্যুলেটে আসার উদ্দেশ্য ছিল, তার পূর্বতন স্ত্রীকে যে তিনি ডিভোর্স (তালাক) দিয়েছেন – এ মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র নেয়া, যাতে তিনি তুর্কি বান্ধবী হাতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করতে পারেন। খাশোগি তার মোবাইল ফোনটি মিস চেঙ্গিসের হাতে দিয়ে ভবনের ভেতরে ঢোকেন।

মিজ চেঙ্গিস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খাশোগি এ সময় বিমর্ষ এবং মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন – কারণ তাকে ওই ভবনে ঢুকতে হচ্ছে।

হাতিস আরও বলেন, খাশোগি তাকে বলেছিলেন যদি তিনি কনস্যুলেট থেকে বের না হন – তাহলে তিনি যেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ানের একজন উপদেষ্টাকে ফোন করেন।

তিনি জানান, তিনি কনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষা করেন মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর একটা থেকে মধ্যরাতের পর পর্যন্ত। কিন্তু তিনি জামাল খাশোগিকে কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেননি।

প্রকাশ :ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯ ৫:০৭ অপরাহ্ণ