২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:০৩

বিদেশে নারীকর্মী প্রেরণে নতুন নির্দেশনা আসছে

বিদেশে নারী গৃহকর্মী প্রেরণ এবং সংশ্লিষ্ট দেশে নিয়োগের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে সরকার। কোনো রকম প্রশিক্ষণ এবং ভাষাজ্ঞান ছাড়া কোনো কর্মী এখন থেকে বাইরে যাওয়ার ছাড়পত্র পাবেন না। এমনকি জবাবদিহীতা ও স্বচ্ছতার আওতায় আনা হবে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে।

বাংলাদেশি কর্মী যদি নিয়োগকর্তার সঙ্গে তার চুক্তির বিষয়ে অবগত না থাকেন কিংবা বিদেশ যাত্রার সময় কর্মীর সঙ্গে চুক্তির কপি না থাকে তাহলে সেই কর্মীকে যাত্রা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দুয়েকদিনের মধ্যে জারি করা হবে। নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে- স্বাক্ষর করা চুক্তি কর্মীকে বুঝতে হবে। তাকে চুক্তির বিষয়গুলো রিক্রুটিং এজেন্সিকে বলতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চুক্তির কপি বিদেশ-গমনের সাথে সম্পৃক্ত সকল স্তরে যাচাই করার ব্যবস্থা করবে। ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্সের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যাচাই করা হবে নারীকর্মীরা চুক্তি সম্পর্কে জানেন কি না।

অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বিষয়গুলো লুকিয়ে রেখে নারীকর্মীদের প্রবাসে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ফলে ওই কর্মী বিদেশে কোনো সমস্যায় পড়লেও সহায়তা চাইতে পারে না। এতে অনেক সময় সে সংশ্লিষ্ট দেশের হাইকমিশনের কাছ থেকে সাহায্য পায় না।

জানা গেছে, নারীকর্মীরা সবধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিমানবন্দরে আসার পরেও আরেক দফা যাচাই-বাছাই করবে সরকার। সেখানে দেখা হবে প্রবাসে যাওয়ার বিষয়ে পুরোপুরি তারা অবগত আছেন কি না। বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্ব রিক্রুটিং এজেন্সির। এসব এজেন্সি যদি না বুঝিয়ে দেয়, কর্মীর সঙ্গে যদি চুক্তির কাগজ না থাকে তাহলে সেই কর্মীর বিদেশ গমন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এ সব বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবের রিক্রুটিং এজেন্সিকেও দায়বদ্ধতার মধ্যে আনার জন্য কাজ করছি। সে জন্য আমাদের দূতাবাসে রিক্রুটিং এজেন্সি নিবন্ধিত হওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে কোনো অভিযোগ আসলে আমরা কালো তালিকাভুক্ত করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘মেডিক্যাল ও ট্রেনিং যথাযথভাবে না করে কর্মীকে বিদেশ পাঠানো হলে এজেন্সির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থ নেব। ইতোমধ্যে আমরা ১০০টির বেশি রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করেছি। যারা ভালো কাজ করবে তাদের আমরা পুরস্কৃত করব।’

সচিব আরো বলেন, ‘রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে শ্রেণিবদ্ধ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে এই কাজ শেষ হবে। এছাড়া আমরা দেখছি সৌদির সব এলাকা এক রকম না। কিছু কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় ঘটনাগুলো বারবার ঘটে। আমরা এসব এলাকায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে রেসট্রিকটেড করে দেব।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে দু’জস কর্মীর নির্যাতনের কথা সম্বলিত ভিডিও ভাইরাল হয়। তাদের সরকারের তত্ত্বাবধায়নে ফেরতও আনা হয়। এরপর থেকে বিদেশে শ্রম চুক্তি এবং চুক্তির যথাযথ প্রতিফলনের বিষয়ে জোর দিচ্ছে সরকার। এরই প্রেক্ষিতে নতুন নীতিমালা করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।

প্রকাশ :ডিসেম্বর ৮, ২০১৯ ১২:৪৮ অপরাহ্ণ