ক্যাসিনোকাণ্ডে আটক যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ক্যাসিনোর টাকা তিনি পরিবারে খরচ করতেন না, এই টাকা দিয়ে তিনি দল চালাতেন।
রবিবার বিকালে মহাখালীর ডিওএইচএসের বাসায় শারমিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এর আগে তার বাসায়ও র্যাব অভিযান চালায়। ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাটকে আটক করে র্যাব। পরে তাকে ঢাকায় আনা হয়।
সম্রাটের স্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিয়ে হয়েছে ১৯ বছর। আমাদের এক ছেলে। ও বাইরে থাকে। তবে দুই বছর ধরে আমাদের মধ্যে সেই রকম সম্পর্ক নেই। কিন্তু সে যে ক্যাসিনোর গডফাদার সেটা জানতাম না। আমি জানি সে যুবলীগের ভালো একজন নেতা।’
শারমিন বলেন, ‘আসলে ওর সম্পদ বলতে কিছু নেই। ক্যাসিনো চালিয়ে যে টাকা অর্জন করত সেগুলো দিয়ে দল পালত। দল চালাত। আর যা থাকত সেই টাকাগুলো দিয়ে সিঙ্গাপুর বা অন্য কোথাও গিয়ে ক্যাসিনো খেলত। এসব টাকা সংসারে খরচ করত না।’
‘ও জনপ্রিয় ছিল। কারণ দল পালত। উত্তরেও তো একজন নেতা আছেন নিখিল। তার তো এত জনপ্রিয়তা নেই।’
সম্রাটের স্ত্রী বলেন, ‘এখন আর রাজনীতি আগের মতো নেই যে বাসায় খেয়ে লোকজন ডাকলে আসবে। তাদের টাকা দিতে হয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অভিযানের জন্য অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে সম্রাটের স্ত্রী বলেন, ‘এই অভিযানটি আরও আগে চালালে ভালো হতো।’
স্বামীর চলাফেরাসহ সার্বিক বিষয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ওর নাম যেমন সম্রাট, সে শুরু থেকে আসলেই সম্রাট ছিল। আরও তো অনেকে আছে। ও কিন্তু আলাদা ছিল।’
সিঙ্গাপুরে সম্রাট জুয়া খেলতে যেত এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওর জুয়া খেলার নেশা ছিল। কিন্তু সম্পদ করার নেশা ছিল না।’
সিঙ্গাপুরে একাধিক নারীর সঙ্গে ছবির বিষয়ে বলেন, ‘একাধিক নয়, একজন নারীর সঙ্গে ওখানে গেলে সময় কাটাত। আমাকে সিঙ্গাপুরে নিত না।’
রাজনীতিতে সম্রাটের বড় ভাই আছে এমনটা বললেও তারা কারা সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি। র্যা বের হাতে গ্রেপ্তার খালেদকে চিনলেও জি কে শামীমকে চেনেন না বলে জানান শারমিন।
স্ত্রী সামনে আসবে, রাজনীতি করবে এসব সম্রাট পছন্দ করতেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ও চাইত না আমি মিডিয়াতে আসি।’
সম্রাটের ঢাকায় কয়টি বাসা বা ফ্ল্যাট আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শান্তিনগর এবং মহাখালীর ডিওএইচএসে যে বাসায় থাকি এটা এবং এই এলাকারই ৩১ নম্বর রোডে একটি ফ্ল্যাটে ধীরে ধীরে টাকা দেয়া শুরু করেছিল।’
কাকরাইলের অফিসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পুরোটা দখল করা নয়। কিন্তু গেটে যেভাবে তল্লাশি করা হয় তাতে অন্যরা সবাই চলে যায়। এতে অফিসটি খালি হয়ে যায়। যে ফ্লোরটাতে ওর অফিস সেটা সম্রাটের।’
অভিযান শুরু হওয়ার পর কোনো যোগাযোগ হয়েছিল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। আমি মাসে একবার যেতাম ওর কাকরাইলের অফিসে। মাঝে কথা হতো। কিন্তু সম্রাট ভাবত আমি বোকা। তাই সত্য বলে দেব। যে কারণে অভিযান শুরু হওয়ার পর কিছু জানি না।’