বিদেশ ডেস্কঃ সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকো-র দুইটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের ড্রোন হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে রিয়াদ। ভয়াবহ ওই হামলার পর সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। এ সময় যুবরাজ ট্রাম্পকে সাফ জানিয়ে দেন, এ হামলার জবাব দিতে তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।.
যুবরাজ বলেন, ওই হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার মতো সক্ষমতা ও প্রস্তুতি দুটোই রিয়াদের রয়েছে। তারপরও নিরাপত্তা ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী সৌদি আরব।২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। ওই লড়াই শুরুর পর থেকে সৌদি আরবে বেশ কয়েক দফায় হামলা চালানোর স্বীকারোক্তি দিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা সৌদি আরবের দুইটি তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালায়। এতে ওই স্থাপনাগুলোতে আগুন লাগে। ফলে দুনিয়াজুড়ে জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। এ ঘটনায় তেলের উৎপাদন অর্ধেকে নামিয়ে আনে রিয়াদ।
হামলার পর হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে জানান, ইয়েমেনের ওপর পাঁচ বছরের আগ্রাসন ও অবরোধের যে জবাব দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ বৈধ ও স্বাভাবিক।
সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ)-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার টেলিফোনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যুবরাজের কথা হয়েছে। এ সময় এমবিএস জানান, ‘সন্ত্রাসী হামালা মোকাবিলায় রিয়াদ সক্ষম ও প্রস্তুত।’
যুক্তরাষ্ট্রের সৌদি দূতাবাসের এক বিবৃতি বলা হয়েছে, ট্রাম্প এমবিএস-কে জানিয়েছেন, ‘ড্রোন হামলার পর সৌদি আরবের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশটিকে সহায়তায় প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।’
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবে প্রায় ১০০ হামলার পেছনে তেহরান জড়িত। উত্তেজনা হ্রাসের সব আহ্বানের মধ্যেও ইরান এখন বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহে ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে।’
সৌদি আরবের ঘাঁটিগুলোতে হামলায় ব্যবহৃত হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনগুলো ইরান তাদেরকে সরবরাহ করে। বরাবরই এমন অভিযোগ করে আসছে রিয়াদ। তেহরান ও হুথি বিদ্রোহীরা অবশ্য বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিতে হুথিদের ড্রোন হামলার পর ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর একজন কমান্ডার দাবি করেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ও বিমান ক্যারিয়ারগুলো তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় রয়েছে।