ঈদযাত্রায় সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়কে ২০৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ২২৪ জন নিহত এবং ৮৬৬ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঈদযাত্রায় শুরুর দিন অর্থাৎ ৬ আগস্ট থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা ১৭ আগস্ট বিগত ১২ দিনে ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।’
এসব ঘটনায় তিনজন শ্রমিক, ৭০ জন নারী, ২২ জন শিশু, ৪২ জন ছাত্রছাত্রী, তিনজন সাংবাদিক, দুই চিকিৎসক, আটজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, তিনজন রাজনৈতিক নেতা, ৯০০ জন যাত্রী ও পথচারী দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে জানান মোজাম্মেল।
যাত্রীকল্যাণ সমিতি জানায়, সড়ক রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ২৪৪টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মোট ২৫৩ জন নিহত এবং ৯০৮ জন আহত হয়েছেন।
মোজাম্মেল বলেন, ‘বিগত ঈদের চেয়ে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো, নৌ-পথে বেশ কিছু নতুন লঞ্চ বহরে যুক্ত হয়েছে, রেলপথেও বেশ কয়েক জোড়া নতুন রেল ও বগি সংযুক্ত হয়েছে। তবে এবারের ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য, যানজটের ভোগান্তি, রেলপথে সিডিউল বিপর্যয় ও টিকিট কালোবাজারি, ফেরি পারাপারে ভোগান্তিসহ নানা কারণে যাত্রীহয়রানি বেড়েছে। বিগত ঈদুল ফিতরের মতো এবারের ঈদের লম্বা ছুটি থাকায় যাত্রীসাধারণকে আগেভাগে বাড়ি পাঠানোর সুযোগ কাজে লাগানো গেলে ঈদযাত্রা আরও স্বস্তিদায়ক করা যেত।’
‘রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতিসহ সার্বিক পরিকল্পনা এবং বিগত ২০১৬ সাল থেকে ঈদযাত্রায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির ধারাবাহিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনসমূহ গণমাধ্যম ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে কাজে লাগানোর কারণে এবারের ঈদে বিগত বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা ৬.৪০ শতাংশ, নিহত ৬.২৫ শতাংশ এবং আহত ১.৫০শতাংশ কমেছে।’
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব জানান, এবছর মোট সংঘটিত ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনার ৬৭টি ঘটেছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩ শতাংশ। যেখানে মোট নিহতের ৩৪.৩৭ শতাংশ এবং মোট আহতের ৮.৪২ শতাংশ। অন্যদিকে পথচারীকে গাড়িচাপা দেয়ার ঘটনা ৫২.২১ শতাংশ ঘটেছে। আগামী ঈদে এই দুটি ঘটনা এড়ানো সম্ভব হলে সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ৮৫.২১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।