সোমবার (৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এদিকে জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা। গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার শতাধিক স্থানীয় নেতাকে। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
এই অচলাবস্থায় সেখানে খাদ্যে স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে যোগাযোগও। কারফিউ থাকায় চলাচলেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। খাবারের স্বল্পতা ও এটিএম কাজ না করায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্তরা।
সানা নামে ২৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, তার কাছে পাঁচ ছয়জন ব্যক্তি এসে দাবি করেছিল তাদের পরিবার না খেয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘মুদির দোকানে যেন মানুষের বন্যা ছিল। মসলা ও শাকসবজির দোকানেও ছিল ভিড়। হাজার হাজার মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। এছাড়া গ্যাস স্টেশনগুলোতেও ছিল গাড়ির লম্বা লাইন। ব্যাংকগুলোতেও টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর উপ-সম্পাদক মুজামিল জলিল টেলিগ্রাফকে বলেন, তারা শ্রীনগরের সব এটিএমেই খোঁজ নিয়ে দেখেছেন টাকা নেই। অনেকেই এখন হাতে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরছে। আর দরিদ্র গোষ্ঠীর কোনও জমা টাকাও নেই।
তবে ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই খাদ্যাভাবের ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, কাশ্মির উপত্যকায় তিন মাসেরও বেশি খাবার মজুত রয়েছে।
অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনকারী ও বিরোধী পক্ষের নেতাকে গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত শতাধিক গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহও রয়েছেন। বিরোধী দলের অভিযোগ, সরকার ভারতের জনতাত্ত্বিক নকশাই পরিবর্তন করে দিতে চাইছে।
সানা বলেন, এই অচলাবস্থায় অনেক নৈরাজ্য ও দ্বিধা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি খুবই ভয়াবহ ও দুঃখজনক। বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে সবাই।
এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হতাহতের খবর পাওয়া গেলেও তা নিশ্চিত করতে পারেনি কোনও সংবাদমাধ্যম।