২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:১৩

ট্রফি জিতেননি মন জিতেছেন নোবেল

বিনোদন ডেস্ক : ভালোবাসার কোনো রঙ নেই, কোনো ব্যাখ্যা নেই। দেশ, কাল, পাত্র, জাত এমনকি কোনো ভাষাও নেই। শুধু আছে কোনোকিছুর প্রতি ভীষণ আবেগ। আমি তেমন একটা গান শুনতাম না। কিন্তু ‘সা রে গা মা পা’ অনুষ্ঠানে নোবেলের গান শোনার পর থেকে তার গানের কণ্ঠের প্রেমে পড়ে যাই। তাই প্রতি সপ্তাহে শনিবার এবং রোববার অপেক্ষায় থাকতাম তার সুমধুর কণ্ঠে গান শোনার জন্য।

গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টায় প্রচার হয়েছে সেই রুটিন করে দেখা দুই বাংলার সবচেয়ে রড় আসর ‘সা রে গা মা পা ২০১৮-১৯’ অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পর্ব। আর দেখা যাবে না সেই মঞ্চ আর নোবেলের মঞ্চ কাঁপানো পারফরম্যান্স।

২০১৮-২০১৯ সিজনের ‘সা রে গা মা পা’ অনুষ্ঠানটি শুরু হয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে। ভারত থেকে নির্বাচিত ৪৮ জন প্রতিযোগী এতে অংশ নেন। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে অংশ নেন সাতজন। তারা হচ্ছেন— অবন্তি সিঁথি, তানজীম শরীফ, রোমানা ইতি, মেজবা বাপ্পী, আতিয়া আনিসা, মন্টি সিনহা ও মাঈনুল আহসান নোবেল। এদের মধ্যে ছয়জন নানা ধাপে ছিটকে গেলেও গোপালগঞ্জের নোবেল জায়গা করে নেন চূড়ান্ত পর্বে।

গতকাল কলকাতার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে এই প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনাল অনুষ্ঠিত হয়। মঞ্চে একে একে সকল অতিথি এসে হাজির হন। ফাইনালের জন্য সকল আয়োজন প্রস্তুত। প্রথমেই ছয়জন ফাইনালিস্টদের নিয়ে একটি মিউজিক্যাল পরিচয় পর্ব শুরু হয়। একে একে পাঁচজন প্রতিযোগী তাদের প্রিয় গায়কদের সাথে মঞ্চে এসে অতিথি ও দর্শকদের সাথে পরিচিত হন। নোবেলও একপর্যায়ে অনুপম রায়ের সাথে মঞ্চে আসেন এবং দুজনে মিলে এলআরবির ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’ শিরোনামের গানটি গেয়ে মঞ্চ মাতান।

এরপর শুরু হয় মূল পর্ব। ভারতের পাঁচজন হিন্দি-বাংলা ভাষার গান মিলিয়ে গাইলেও নোবেল প্রথমে গান ‘আমি বাংলায় গান গাই’। তারপর প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও সুর করা আর জেমসের কণ্ঠে জনপ্রিয় হওয়া ‘বাংলাদেশ’ শিরোনামের দ্বিতীয় গানটিতে কণ্ঠ দেন তিনি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো— এই অনুষ্ঠানটি সবসময় নোবেলের গান দিয়েই শেষ হতো, গ্র্যান্ড ফিনালেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা যীশু সেনগুপ্ত। সবার অপেক্ষা  গ্র্যান্ড ফিনালের ফলাফলের জন্য। বিশাল বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে তখন নীরবতা নেমেছে। সবার ধারণা ছিল, নোবেল-ই পাবেন সেরার মুকুট। কিন্তু প্রথমেই দ্বিতীয় রানার-আপের নাম ঘোষণা করা হলো। ঘোষণাটি শোনার পর কেউ তাদের কানকে বিশ্বাস করতে পারেননি। কারণ নোবেল তৃতীয় হবেন তা সবার ভাবনার বাইরে ছিল।

যেখানে বছরব্যাপী এই মঞ্চে নোবেল বিচারক শ্রীকান্ত আচার্য, মোনালী ঠাকুর ও শান্তনু মৈত্রকে গানে শুনিয়ে মাত করেছেন। ভারতের অনেক গান স্রষ্টাও এই মঞ্চে এসে নোবেলের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এবং গান শুনে তার ভক্ত হয়েছেন। সেই নোবেলই প্রীতমের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় রানার-আপ অর্থাৎ তৃতীয় হয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন হন অঙ্কিতা। প্রথম রানার-আপ হন গৌরব এবং স্নিগ্ধজিৎ।

নোবেল হয়তো চ্যাম্পিয়ন হননি, কিন্তু ভারতীয় শ্রোতাদের হৃদয় হরণ করেছেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন এবং সে ভালোবাসা এখনো তার সঙ্গে রয়েছে। আবারো হয়তো ‘সা রে গা মা পা’-এর মঞ্চে অনেক ভালো শিল্পী উপস্থিত হবেন, কিন্তু নোবেলের মতো সবার প্রিয় প্রতিযোগী আর হবে না। নোবেল চ্যাম্পিয়ন না হলেও সবার মন জয় করতে পেরেছেন, এটাই একজন শিল্পীর স্বার্থকতা।

প্রকাশ :জুলাই ২৯, ২০১৯ ৫:৫৪ অপরাহ্ণ