চিলমারীর প্রবেশ মুখে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে রমনা ইউনিয়নের হরিপুর এলাকার মহির প্রামাণিকের বাড়ির পাশের একটি সাব বাঁধ ভেঙে গিয়ে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজগার আলী সরকার। তিনি জানান, তার ইউনিয়নের বাসন্তিপাড়া, মাঝিপাড়া, রায়পাড়া, টোন গ্রাম, উত্তর রমনা, খেউনি পাড়াসহ অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় এসব গ্রামের বাসিন্দারা ইউনিয়নের ওয়াবদা বেরিবাঁধ, জোরগাছ ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রিয়াজুল জান্নাত মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আরও নতুন নতুন আশ্রয় কেন্দ্র খোলার প্রয়োজন হতে পারে বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।
কুড়িগ্রাম সদরের চর যাত্রাপুর, পোড়ারচর, কালির আলগাসহ যাত্রাপুর ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উমর ফারুখ জানান, ধরলা নদীর পানি বেড়ে তার ইউনিয়নে ধরলার উত্তর তীরবর্তী অংশের গ্রামসহ সারডোব, সাত কালোয়া, খামার হলোখানা এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।.
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ ভেঙে পড়েছে। চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভয়াবহভাবে পানি বাড়ছে। আমার ইউনিয়নের মশালের চর এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। এখন পর্যন্ত ইউনিয়নের প্রায় চার হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’
নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমান জানান, তার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাতটি ওয়ার্ডের সব গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তিনি নৌকায় করে তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে জানান এই চেয়ারম্যান।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বেড়ে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নদীগুলোর উৎস স্থলের ভারতীয় অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় উজানের ঢলে আগামী দুই তিনদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাফিজুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তালিকা পেলেই বরাদ্দ দেওয়া হবে।