আসামের চা-সমৃদ্ধ ধেমাজি ও লক্ষিপুর আর নিম্নাঞ্চলে বোঙ্গাইগাও ও বারপেতা এলাকা সবচেয়ে তীব্র বন্যার কবলে পড়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন উঁচু এলাকার বন্যার পানি উপত্যকা ধরে নিচে নামায় নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক করে তুলেছে। ভুটানের পার্বত্য এলাকাতেও জারি করা হয়েছে বন্যার সতর্কতা।
আসামের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবচেয়ে তীব্র বন্যার কবলে পড়েছে বারপেতা জেলা। সেখানকার ৮৫ হাজার মানুষ আশ্রয়ের খোঁজে রয়েছে।
এ সপ্তাহে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় শুক্রবার আসাম জুড়ে নৌ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন বন্যার পানির নিচে চলে গেছে ২৭ হেক্টর কৃষিজমি। রাজ্যের ৬৮টি ত্রাণ কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সাত হাজার মানুষকে।
পার্শ্ববর্তী অরুণাচল রাজ্যের চীন সীমান্তবর্তী টাওয়াং শহরে ভূমিধসের কবলে পড়ে নিহত হয়েছে দুই স্কুল শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে নতুন করে ভূমিধসের কবলে পড়তে থাকে নতুন নতুন এলাকা।
আসামের উঁচু অঞ্চলের কাজীরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে প্রবেশ করেছে বন্যার পানি। ফলে সেখানে থাকা বিপন্ন এক শিং ওয়ালা গন্ডারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। পার্ক এলাকার জাতীয় মহাসড়কে যানবাহনের গতিসীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যাতে করে প্রাণীরা বন্যার পানি এড়িয়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে পারে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল বৃহস্পতিবার বন্যা কবলিত জেলার প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন। তিনি সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
বন্যা ছাড়াও মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগের প্রকোপ মোকাবিলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আসাম। স্বাস্থ্য বিভাগের সব কর্মীদের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এই রোগে আসামের নয়টি জেলা সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর। ২০১৩ সাল থেকে এই রোগে সেখানে প্রায় সাতশো মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।