খুলনা থেকে প্রতিনিধি: খুলনাঞ্চলের সাড়ে ৪৪ হাজার শিক্ষার্থী পাবে দুপুরের খাবার। এ উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
১ জুলাই থেকে সপ্তাহে তিনদিন দুপুরে এসব শিক্ষার্থীদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে। সপ্তাহের বাকী তিনদিন বিস্কুট সরবরাহ করা হবে।
দুপুরের ক্ষুধা নিবারণ, পুষ্টির অভাব পূরণ, স্বাস্থ্যবান জাতি গঠন, শ্রেণিকক্ষে শতভাগ উপস্থিতি ও ঝরে পড়া বন্ধ করতেই এ উদ্যোগ।
খুলনার বটিয়াঘাটা ও যশোরে ঝিকরগাছার ২৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এই খাবারের আওতাভূক্ত করা হয়েছে। এর আগে এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিদিন বিস্কুট দেওয়া হত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য ৯০ গ্রাম চাল, ২৫ গ্রাম ডাল আর ৭০ গ্রাম সবজি মিলিয়ে খিচুড়ি রান্না করে সরবরাহ করা হবে। যার মাথাপিছু বরাদ্দ ১৬ টাকা।
প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মেহেরুন নেছা জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ কর্মসূচির ফলে দুপুরের ক্ষুধা নিবারণ হবে, পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে। স্বাস্থ্যবান জাতি গড়ে উঠবে। পাশাপাশি ভর্তির হার বাড়বে, ঝরে পড়া হ্রাস পাবে। উপস্থিতির হার শতভাগ নিশ্চিত হবে।
বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, দুপুরের খিচুড়ির জন্য উপকরণ হিসাবে মিনারেল, খনিজ মেশানো চাল, সয়াবিন, ডাল ও পাতা যুক্ত সবজি থাকবে। শিক্ষার্থীরা দুপুরে সুষম খাবার পাবে।
ঝিকরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসমত আরা পারভিন জানান, এ ব্যাপারে একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। ৩ থেকে ১২ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরা এই নীতিমালার আওতায় আসবে।
ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকিফুজ্জামান বলেন, ‘এই পদ্ধতি চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত হবে। এ প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে। তাদের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ২০ শতাংশ।’
বটিয়াঘাটা উপজেলা সদরের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ মল্লিক জানান, তার স্কুলে উপজেলা সদরের পার্শবর্তী হেতালবুনিয়া, হাটবাটি ও কিসমত ফুলতলা গ্রামের ৩০২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ জন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ওপর বসবাস করা পরিবার থেকে আসা ৫০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে। অনন্তঃ এদের দুপুরে আর খাবার চিন্তা থাকবে না। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহমুদা রশিদ প্রভা জানিয়েছে, দুপুরের খাবারের খবর তার কাছে আনন্দের।
২০১১ সাল থেকে সরকার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি যৌথভাবে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় দুপুরে শুধুমাত্র বিস্কুট সরবরাহ করা হতো। খুলনা বিভাগের পাঁচ জেলায় ১৪টি উপজেলায় ২ হাজার ৩৪৫টি স্কুলে ৩লাখ ৫১হাজার ২৪৬জন শিক্ষার্থী সপ্তাহে তিনদিন দুপুরে বিস্কুট খেয়ে আসছে। বিস্কুট পাওয়া উপজেলাগুলো হচ্ছে, নড়াইলের লোহাগাড়া, সাতক্ষীরার আশাশুনি, কলারোয়া, কালিগঞ্জ, তালা, শ্যামনগর, যশোর জেলা সদর, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, খুলনার বটিয়াঘাটা, দাকোপ, বাগেরহাটের ফকিরহাট, শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ।