সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা: এই জেলার শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষের প্রতিদিনের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো।
চর নরিনা বাজার সংলগ্ন হুড়াসাগর নদীর উপর ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্য’র এই বাঁশের সাঁকোটি স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত।
জানা যায়, চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসি উদ্যোগ নিয়ে এলাকাবাসির কাছ থেকে চাঁদার টাকা তুলে ও এলাকাবাসির সেচ্ছা শ্রমের বিনিময়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সাঁকোটি তৈরি করা হয়। সেই থেকে প্রতি বছর একইভাবে এলাকাবাসির সহযোগিতায় এ বাঁশের সাঁকোটির সংস্কার কাজও করা হয়।
এ গ্রামে যাতায়াতে এই বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা। বাঁশের সাঁকো দিয়ে চর নরিনা সহ ১৬টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ ও ১০টি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ৩ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে।
গ্রামগুলো হলো- চরনরিনা, নরিনা, টেপরী, চরটেপরী, বারইটেপরী, পুনারটেপরী, বওশাগাড়ি, সাতবাড়িয়া, আগনুকালি, জয়রামপুর, চিলাপাড়া, মালতিডাঙ্গা, চরডিগ্রির চর, খামারউল্লাপাড়া, কালিপুর ও ধুকুরিয়াবেড়া।
আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- চরনরিনা উচ্চ বিদ্যালয়, চরনরিনা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরনরিনা পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খামার উল্লাপাড়া হাই স্কুল, সাতবাড়িয়া হাইস্কুল, সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ, সাতবাড়িয়া কারিগরি কলেজ, সাতবাড়িয়া মাদ্রাসা, নরিনা হাইস্কুল ও নরিনা মাদ্রাসা।
চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ আব্দুস সেলিম জানান, চর নরিনা বাজার ও চর নরিনা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এ বাঁশের সাঁকোটি ৩ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। সাঁকোটির নির্মাণ দীর্ঘ দিনের হওয়ায় এটি এখন নড়বড়ে হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই বর্ষা মৌসুমে এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াতের সময় অনেক স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে যায়।
টেপরী ও চরটেপরী গ্রামের সুজাবত আলী মহুরী, সেলিম হোসেন, স্বপন মেম্বর, রফিকুল ইসলাম, ঠান্ডু মিয়া বলেন, ‘শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের চর নরিনা গ্রামটি অত্যন্ত দূর্গম এলাকা। এখানে একটি ভাল ব্রিজ খুবই জরুরী।’
এ ব্যাপারে নরিনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মন্ত্রী বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে এখানে একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি।’
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন বলেন, ‘এলাকাবাসি এ বিষয়ে লিখিত আবেদন করলে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’