নিজস্ব প্রতিবেদক
অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়ে লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য গণশুনানি জনগণের সঙ্গে চরম পরিহাস। আজ শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী নাগরিক অবস্থান সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।
সমাবেশ থেকে গণশুনানির নামে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা বন্ধ, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সদস্যদের মধ্যে পক্ষপাতদুষ্ট ও দুর্নীতিবাজদের শাস্তি, চুলায় নিয়মিত গ্যাস ও সারা দেশে ন্যায্য মূল্যে নিরাপদ গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ, গ্যাস খাতে দুর্নীতি অপচয় বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, রাজনীতিক রুহিন হোসেন প্রিন্স, শ্রমিকনেতা রাজেকুজ্জামান রতন, নারী নেত্রী লূনা নূর, অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী, শরিফুজ্জামান শরীফ, ক্ষেতমজুরনেতা মোতালেব হোসেন, মোহাম্মদপুরের ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন, জাভেদ জাহান, লালবাগের অর্ণব সরকার, কমলাপুরের ডা. আব্দুল মান্নান, গ্রিন ভয়েসের সামাদ প্রধান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, মানুষ জানে গ্যাস নিয়ে কী দুর্ভোগ চলছে। সরকারের দায়িত্ব দুর্ভোগ কমানো।, এটা না করে সরকার আরো দুর্ভোগ বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য ১১ মার্চ যে গণশুনানির আয়োজন করা হচ্ছে তা জনগণের সঙ্গে চরম পরিহাস।
আবুল মকসুদ বলেন, মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এখন ন্যায্য মূল্যে গ্যাসের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার আয়োজন চলছে। গ্যাসের অধিকার, ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। তিনি ১০ মার্চের মধ্যে গ্যাসের দাম না বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে ঘোষণার দাবি জানান।
এম এম আকাশ তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, নানাভাবে খরচ বাড়িয়ে চলেছে কোম্পানিগুলো। দুর্নীতি-লুটপাট সর্বত্র। আমরা নিয়মিত গ্যাস পাই না, চুলায় কম গ্যাস ব্যবহার করে বেশি দাম দিচ্ছি। এরপর দাম বাড়ানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।
এম এম আকাশ বলেন, বিদ্যুৎ, সার, শিল্প, আবাসিকে দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব করা হয়েছে, এটি বাস্তবায়িত হলে সর্বত্র মূল্যবৃদ্ধির খড়গ নেমে আসবে সাধারণ মানুষের ওপর। অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি গ্যাস খাতে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে ন্যায্য দামে জনগণের গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, গণশুনানিতে আমরা যা প্রমাণ করি, ফলাফল তা হয় না। এখানে সরকার, কমিশনভোগী এজেন্ট আর ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজদের স্বার্থরক্ষা করা হয়। তিনি নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ ও সারাদেশে ন্যায্য মূল্যে নিরাপদ গ্রাস সিলিন্ডার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
শতভাগ দেশের মালিকানা নিশ্চিত করে স্থলেও সমুদ্রবক্ষের গ্যাস উত্তোলন, এলএনজি আমদানির নামে সাধারণের পকেট কেটে ব্যবসায়ী কমিশন ভোগীদের পকেট ভারি করার অপনীতি বন্ধের দাবি জানান এই রাজনীতিবিদ।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকার দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া থেকে সরে না এলে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অযৌক্তিক কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকার ও বিইআরসিকে বাধ্য করা হবে। এ ছাড়া সমাবেশে বিইআরসির বিরুদ্ধে গণশুনানির নামে জনস্বার্থ লংঘনের অভিযোগ করা হয়।