খেলা ডেস্ক
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এক রকমের অপ্রতিরোধ্যই। মরিনহো যুগের পর ওলে গুনার সুলশারের জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া ম্যানইউ যেন ‘হারতে’ ভুলে গেছে! সুলশারের অধীনে এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত ১১ ম্যাচ খেলে অপরাজিত ইউনাইটেড; ১০টা জয়, একটা ড্র। অন্যদিকে টমাস টুখেলের পিএসজিও কম কিসে! দুই ম্যাচ হাতে রেখে ১০ পয়েন্টের ব্যবধানে লিগ ওয়ানের শীর্ষে ফরাসি জায়ান্টরা। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের খেলায় দুই দল যখন মুখোমুখি তখন পিএসজি ভক্তদের মনে মেঘকালো অন্ধকার—তাঁদের মূল তারকা নেইমার যে এ ম্যাচে নেই; নেই কাভানিও। এদের ছাড়া ম্যানইউর জয়ের রেলগাড়ির শেকল টানা যাবে তো?
পিএসজি ভক্তদের মনে জমে থাকা কালো মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরেনি শেষ পর্যন্ত। ম্যানইউর দুর্গেই ইংলিশদের মাটিতে নামিয়ে এনেছে সুলশারের শিষ্যরা। ছিনিয়ে এনেছে ২-০ গোলের ব্যবধানে দাপুটে জয়। প্রথমবারের মতো কোনো ফরাসি ক্লাব ওল্ড ট্রাফোর্ডে পেল জয়ের স্বাদ।
ম্যাচের প্রথমার্ধটা ছিল ম্যাড়ম্যাড়ে। কারও কাছে রাতজাগাটা ততক্ষণে বৃথা মনে হলে দোষ দেওয়ার উপায় নেই। দুই দলের নির্বিষ আক্রমণ প্রতিপক্ষের সীমানায় গিয়ে যেন মুখ থুবড়ে পড়ে। বল দখলের লড়াইয়ে প্রথমার্ধে দুই দলই প্রায় সমানে-সমান। প্রথমার্ধে ম্যানইউ গোলমুখে শট নিল মাত্র ৩টি! অতিথিদের দশা আরও বেহাল। স্বাগতিকদের গোলমুখে পিএসজি শট নিয়েছে ২টি। ২৮তম মিনিটে বলার মতো সুযোগ তৈরি করেছিল পিএসজি। কিন্তু ম্যানইউ গোলরক্ষক ডি গিয়াকে একা পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেন পিএসজির এমবাপ্পে। এর আগে ২৬তম মিনিটে মার্কো ভেরাত্তিকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ম্যানইউর ফরাসি তারকা পগবা। এমবাপ্পের বাজে মিসের মিনিট দু-এক পর ফের গোলের সুযোগ পায় পিএসজি। সেটাও কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপ্পে-ডি মারিয়ারা। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূণ্য স্কোরলাইনে।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে ধার বাড়ায় দুই দলই। তবে গোলের দেখা পায় শুধু অতিথিরা। ৫৩তম মিনিটে কিমপেমবের গোলে লিড নেয় পিএসজি। ডি মারিয়ার হাওয়ায় ভাসানো কর্নার কিক ফাঁকায় থাকা কিমপেমবে ডি গিয়াকে বোকা বানিয়ে জালে জড়ান। ৭ মিনিটের মাথায় আবারও স্বাগতিকদের জালে বল। এবার ব্যবধান বাড়ান কিলিয়ান এমবাপ্পে। এবারো ডি মারিয়ার বাড়ানো বল থেকে গোল পায় পিএসজি। আর্জেন্টাইন এই তারকার নিচু করে বাড়ানো বলে গোল করেন এমবাপ্পে।
শেষ মুহূর্তে এসে পগবার দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ম্যাচের শেষে কিছুটা নাটকীয়তা বাড়ালেও খেলার ফলাফলে পরিবর্তন আনতে পারেনি। দশজনের ম্যানইউ ঘুরে দাঁড়িয়ে খেলায় ফিরতে পারেনি।