এবার আসা যাক রুকু-সেজদার দিকে। কিছুসংখ্যক ইমামের রুকু ও সেজদাহ এবং অবস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যেমন রুকু থেকে ওঠা ও দুই সেজদার মাঝে এত তাড়াহুড়া করতে দেখা যায় যেন তার বিমান-ট্রেন ছেড়ে দেবে এখনই।
আমাদের মুখে এসব কথা বলা হয়তো শালীনতার পর্যায়ে পড়ে না। বলতে হচ্ছে এ কারণে যে আমরা সালাত আদায় করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি মসজিদে এ পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি।
তাদের বলা হলে উত্তর এমনও আসে আপনার কোনো ধর্মীয় শিক্ষার সার্টিফিকেট আছে কি? কম-বেশি ইমান-আকিদার বই তো আমরা পড়ে থাকি আর এখন তো ইচ্ছা থাকলে মক্কা-মদিনার প্রতিদিনের সালাতই টেলিভিশনে এমনকি ইউটিউবে দেখা যায়। কাজেই বিবেক সম্পন্ন মানুষ তো আজ আর অন্ধ নয়।
কোরআনুল কারিমের সূরা তাওবার প্রথম দিকের আয়াতে বলা হয়েছে তোমরা সালাতে বিনয়ী হও, সালাতে খুশু অবলম্বন কর। অন্য এক আয়াতে বলা হয়েছে তারতিলের সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত কর।
সুস্পষ্ট আয়াত দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা নির্দেশ দেয়ার পরও তারা কোরআনকে অমান্য করে।
আল্লাহর আদেশ পালনে গড়িমসি করতে দেখা যায়। সেজদায় আল্লাহর তাসবিহ তিনবার পাঠ করতেই কষ্ট হয়। দুই সেজদার মাঝে রাব্বেগফিরলি তিনবার পাঠ করা কষ্ট হয়।
সামিআল্লাহহুলিমান হামিদাহ্ বলার পর রাব্বানা লাকাল হামদ কোনোক্রমে পাঠ করেই দ্রুত সেজদায় চলে যান। অথচ সহিহ হাদিসে আছে হামদান কাসিরান তইয়্যেবান মুবারাকান ফিহি, বললে ত্রিশজন ফেরেশতা পাঠকারী ব্যক্তির আমলনামায় নেকি লেখার জন্য প্রতিযোগিতা করে থাকেন (সুবহানআল্লাহ)। এই শব্দটি পাঠের সুযোগ হচ্ছে না।
এই প্রকৃতির ইমামরা কি এই চিন্তা করেন যে তার চেয়ে যেন কেউ বেশি নেকি অর্জন করতে না পারে। অবস্থাদৃষ্টে তো তাই মনে হয়।
নীরব সালাতে অর্থাৎ যে সালাতে কেরাত গোপনে পড়তে হয় সেই সালাতের সঙ্গে জাহেরি সালাতের তুলনা করলে দেখা যাবে ইমামরা জাহেরি সালাতে সূরা ফাতিহা এবং কেরাত এত সুললিত কণ্ঠে টেনে টেনে পড়ে থাকেন যা হৃদয় ভরিয়ে দেন।
এ সত্য কথা বলতেই হবে কিন্তু গোপনীয় নামাজে দেখবেন আপনি সূরা ফাতিহার সিরাতিল লাজিনা বলতে পারবেন না এর মধ্যে ইমাম রুকুতে চলে গেছেন।
এমন দৃশ্য দেখে মনে প্রশ্ন আসে সূরা ফাতিহা পড়ার কোনো সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি মনে হয় আছে অথবা তোতাপাখির বুলির মতো পড়ার পদ্ধতিও হয়তো আছে।
নতুবা তারা এত তাড়াতাড়ি কীভাবে রুকুতে যাচ্ছেন। তাই যদি হয় তাহলে আওয়াজ করে পড়ার সময় তারা তাদের কণ্ঠ কত মধুর তা মুসল্লিদের শুনিয়ে থাকেন।
আমাদের অনুরোধ থাকবে কণ্ঠের মাধুর্যতা যেমন করে শুনিয়ে থাকেন তেমনি করে গোপনীয় নামাজে নিজের অন্তরকে ওইভাবে অনুগ্রহ করে শোনান।
যাতে করে আপনাকে যারা ইকতেদা করছে তাদের মধ্যে যারা সূরা ফাতিহা পড়ে থাকেন তাদের ধীরে পড়ার সুযোগ দিন। এতে হয়তো বেশি হলে ১ মিনিট সময় বেশি লাগতে পারে এর বেশি নয়। আমরা সবাই আল্লাহকে ভয় করে তাড়াহুড়া করা থেকে বিরত থাকি।
আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা আমাদের সঠিক আকিদা ঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন।