শীতকাল যেমন পরিচিত ভূরিভোজের জন্য,তেমনি নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি।তাই শীতকালে সাবধানে থাকা প্রয়োজন। শীতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের সংখ্যা দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।বছরের এই সময় নানাবিধ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় চোখে পরার মতো।
শীতে সুস্থ থাকতে নিয়মিত টমেটো খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।শরীরে উপকারী ভিটামিন এবং মিনারেলের পাশাপাশি আরও এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে ক্ষতিকর জীবাণুরা ধারেকাছে ঘেঁষার সুযোগই পায় না।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটোয় উপস্থিত ভিটামিন এ, ফ্লেবোনয়েড, থিয়ামিন, ফোলেট এবং নিয়াসিন শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে একাধিক চোখের রোগকে দূরে রাখতেও এই উপদানগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
টমেটোয় উপস্থিত মিনারেল এবং ভিটামিন শরীরে প্রবেশ করার পর শিরা-ধমনীর ওপর রক্তের প্রেসার কমতে শুরু করে। ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই নিয়মিত ২-৩টি করে টমেটো খেতে ভুলবেন না যেন!
ক্যানসার
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটোয় উপস্থিত লাইকোপেন প্রস্টেট, কলোরেকটাল এবং স্টমাক ক্যানসার রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে লাইকোপেন হলো একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষের বিভাজন ঠিকমতো হতে সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যানসার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে।
স্কিন টোনের উন্নতি
টমেটোয় উপস্থিত লাইকোপেন নামে একটি উপাদান ত্বকের সৌন্দর্যতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে আরেকভাবেও এই সবজিটিকে কাজে লাগাতে পারেন। কীভাবে? ১০-১২টা টমেটো নিয়ে ভেতরটা পরিষ্কার করে নিন। তারপর টমেটোর স্কিনটা ভুল করে সারা মুখে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পরে ভালো করে মুখটা ধুয়ে নিন।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা
নিয়মিত ১-২টি করে টমেটো খাওয়া শুরু করলে শরীরে ভিটামিন সি-এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই ভিটামিনটি দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতিতে সাহায্য করে। ফলে সি ভিটামিনের পরিমাণ শরীরে যত বাড়ে, তত রোগ ভোগের আশঙ্কা হ্রাস পেতে শুরু করে।
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটোর শরীরে উপস্থিত নানাবিধ উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে হজমসংক্রান্ত যে কোনো ধরনের সমস্যা কমতে একেবারেই সময় লাগে না।
হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি
টমেটোয় উপস্থিত ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম, শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি
টমেটোতে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি ভিটামিনের সন্ধান পাওয়া যায়, যেমন ধরুন ভিটামিন এ, কে, বি১,বি৩,বি৫,বি৭ এবং সি। সেই সঙ্গে টমেটোর শরীরে প্রচুর মাত্রায় মজুত থাকে ফলেট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিঙ্ক এবং ফসফরাসের মতো খনিজও। তাই নিয়মিত টমেটো খেলে শরীরের যে নানাবিধ উপকার হয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
বয়স কমে
আপনার বয়স কি ৩০ পেরিয়েছে? তাহলে প্রতিদিন টমেটোর রস লাগানো শুরু করুন মুখে। কারণ এই বয়সের পর থেকেই নানা কারণে ত্বক বুড়িয়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বলিরেখা প্রকাশ পাওয়ার কারণে সৌন্দর্য কমে চোখে পরার মতো।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি দূর করে
কখনও খাবারের সঙ্গে তো কখনও অন্যভাবে আমাদের শরীরে টক্সিক উপাদানের প্রবেশ ঘটে। এই ক্ষতিকারক উপাদানগুলো যাতে শরীরের কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে একাধিক রোগের হাত থেকেও রক্ষা করে।
হাড় শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিনকে সমৃদ্ধি হওয়ার কারণে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে টমেটোর কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বুড়ো বয়সে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের হাত থেকে বাঁচতে এখন থেকেই টমেটো খাওয়া শুরু করুন।