২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:১৪

ইসিকে গ্রহণ না করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে ইসির প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আবেদনটি এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ইসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন এ নির্দেশ দেন বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন ঢাকার মিরপুর-১৩ নম্বরের (কাফরুল) বাসিন্দা ও বিএনপি সমর্থক পরিচয়দানকারী মো. মোজাম্মেল হোসেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। যিনি সুপ্রিমকোর্ট আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের নেতা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম মাসুদ রুমি।

ওই সংশোধনীর মাধ্যমে মূলত বিএনপির গঠনতন্ত্রের সপ্তম ধারা বাদ দেয়া হয়, যেখানে বলা ছিল- দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি বিএনপির নেতা বা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে সংশোধিত গঠনতন্ত্র ইসির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।

হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের ফলে গঠনতন্ত্রের ওই সংশোধনী আপাতত কার্যকর থাকছে না। তাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলীয় নেতৃত্বে রাখা এবং নির্বাচনে তাদের দলীয় মনোনয়ন দেয়ার সুযোগও আটকে যাচ্ছে।

আদেশের পর সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম মাসুদ রুমি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোজাম্মেল হোসেন বলেছেন তিনি একজন বিএনপি কর্মী। গতকাল (মঙ্গলবার) ইসিতে তিনি একটি আবেদন দিয়েছেন যাতে বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ করা না হয়।’ তিনি বলেছেন, ‘এ গঠনতন্ত্র গ্রহণ করা হলে বিএনপিতে দুর্নীতিবাজ, অযোগ্য ব্যক্তিরা নেতা হওয়ার সুযোগ পাবেন। আদালত তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে রুল ও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন।’

দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের দলীয় কমিটিতে না রাখার যে বিধান বিএনপির গঠনতন্ত্রে ছিল, সংশোধনীতে তা বাদ দেয়া কেন বেআইনি হবে না এবং সংবিধানের ৬৬(২) ঘ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী হবে না- তা রুলে জানতে চেয়েছেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সংশোধনের আগে বিএনপির গঠনতন্ত্রের সপ্তম ধারায় বলা ছিল, দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি বিএনপির কোনো পর্যায়ের কমিটির সদস্য কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ‘অযোগ্য’ বিবেচিত হবেন। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের আগে গত ২৮ জানুয়ারি সপ্তম ধারা বিলুপ্ত করে বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির কাউন্সিলে এসব সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নিবন্ধিত হওয়ার সময় দলীয় গঠনতন্ত্র জমা দিতে হয়। আর সংশোধন করা হলে তা নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হয়। কোনো দলের গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হল কিনা, তা দেখা ইসির দায়িত্ব।

আদেশের পর এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, বুধবার দুপুর পর্যন্ত আদেশের কপি পাইনি। পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেব।

এদিকে এক প্রতিক্রিয়ায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগে আদালত বর্জনের কর্মসূচি ছিল। এ কর্মসূচির মধ্যে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। এতে সরকারের কোনো হাত আছে কিনা, বা আইনিভাবে হয়েছে কিনা- বিষয়টি আমরা

প্রকাশ :নভেম্বর ১, ২০১৮ ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ