যেকোনো মুহূর্তে তফসিল ঘোষণা হতে পারে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ ভোট দিয়ে আবার আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করলে ঘোষিত লক্ষ্য অনুযায়ী তাঁরা দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাবেন।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে বক্ষব্যাধি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ভবন উদ্বোধন এবং আরো কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সময় প্রায় শেষ। হয়তো নির্বাচন কমিশন যেকোনো সময় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, তাহলে আমরা তাদের সেবা করতে পারব এবং আমাদের যে লক্ষ্য আমরা স্থির করেছি, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা পালন করব, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা ব্যাপকভাবে উদ্যাপন করব।’
সেই লক্ষ্য নিয়েই ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যে বাংলাদেশকে একসময় সবাই অবহেলা করত, এখন আর বাংলাদেশ অবহেলিত নয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা সম্মান
পেয়েছিলাম বিশ্বে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর সে সম্মান হারিয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশকে আবার আমরা সেই হারানো গৌরব ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। যখনই আওয়ামী লীগ সরকারের এসেছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে পেরেছি।’
গত ১০ বছরে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায় আওয়ামী লীগ উন্নয়ন অব্যাহত রেখে মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে যেখানেই যায় একটা মর্যাদা পায়, সম্মান পায়।’
শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের সময় দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে তিনটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। সামনে নির্বাচন, আবার যদি ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে বাকি বিভাগগুলোতেও করে দেব।’
মানুষ যেন স্বাস্থ্যসেবা পায় সে জন্য হাসপাতাল নির্মাণে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা হচ্ছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, তারা যাতে স্বল্প শুল্কে হাসপাতালের বিভিন্ন সামগ্রী এবং যন্ত্রাংশ আমদানি করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব সরকারি হাসপাতালের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি আগত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে আমরা যেমন দেশের উন্নয়ন করেছি, তেমনি বহির্বিশ্বেও বাংলাদেশের মানমর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম শিশির ও স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব সিরাজুল ইসলাম খান বক্তব্য দেন।