ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য চুক্তি করেছে দুই দেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের নয়াদিল্লিতে এই চুক্তিতে সই করেন বাংলাদেশের নৌ পরিবহন সচিব আবদুস সামাদ ও ভারতের জাহাজ মন্ত্রণালয়ের সচিব গোপাল কৃষ্ণ। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড’ এর (পিআইডব্লিউটিটি) এই বৈঠকে এই চুক্তি হয়। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে নদী সংযোগ বাড়িয়ে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য অভিন্ন নদীর সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে আসামের গুয়াহাটি ও জোরহাটের মধ্যে নদীপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
ভারতের প্রধান আগ্রহ বাংলাদেশের বন্দর ও নদীপথ ব্যবহারের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য সরবরাহ, যাতে পরিবহনের খরচ কমে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি এই কাজে যথেষ্ট সহায়ক হবে। নদীপথের নাব্যতা বাড়াতে ভারত অভিন্ন নদীগুলোর ড্রেজিংয়ের মোট খরচের ৮০ শতাংশ বহন করবে।
চুক্তি শেষে দুই দেশের সচিবরা বলেন, এই চুক্তি ও বোঝাপড়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের পাশপাশি দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে অবদান রাখবে। বাণিজ্য বাড়বে এবং দুই দেশের মানুষ লাভবান হবে।
বাংলাদেশকে ভারত বলেছে, তাদের পণ্য তৃতীয় দেশে রপ্তানির জন্য ভারত কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে রাজি। বাংলাদেশ এই প্রস্তাব বিবেচনায় রেখেছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকে নদী ও সমুদ্র পথে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। সূত্র জানায়, বেসরকারি ক্রুজ পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলার পর তা চূড়ান্ত করা হবে। নৌ পরিবহন সচিব আবদুস সামাদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নদী ও সমুদ্রপথে পর্যটনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। প্রটোকল রুটে ভারতের আসামের ধুবড়ি ও বাংলাদেশের পানগাঁও বন্দরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের নকুগাঁও স্থল বন্দর ও ভারতের ডালু চেক পোস্টের সঙ্গে ভুটানের জেলেফুর সংযোগ ঘটানোর বিষয়টিও আলোচিত হয়েছে। প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে তিন দেশেরই বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। নৌ-পরিবহন সচিবের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে অংশ নিতে এখন ভারতে অবস্থান করছে।