নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অথবা বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জনসভার ডাক দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ সোমবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি’র উদ্যোগে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ এখন আওয়ামী কু-রাজনীতির ঘোঁট পাকানো অবস্থার মধ্যে নিপতিত হয়েছে। এখন সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছা অনুযায়ী আইনী প্রক্রিয়া ও বিচারিক কার্যক্রম চলে। ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলা এটির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’
এ বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘২১ আগস্ট ২০০৪, হামলাকারী আসামিরা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর বাসা হতে গ্রেনেডগুলো সংগ্রহ করে তা পশ্চিম মেরুল বাড্ডায় মুফতি হান্নানের অফিসে নিয়ে আসে। অতঃপর সেখানে অপারেশনের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত মিটিং করে। পরদিন ২১ আগস্ট সকালেই তারা অপারেশনস্থলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সভাস্থলে পৌঁছে যায়।’
‘দেশি-বিদেশি (এফবিআই) তদন্ত সংস্থা তথা এমন অপরাধ সম্পর্কিত সামরিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেছিলেন যে এমন নিখুঁত টাইমিং ও টার্গেট (ট্রাক-মঞ্চ পরিহার করে পরিচালিত) সফল হামলা অবশ্যই এ বিষয়ে প্রফেশনাল লোক তথা যথাযথ পূর্ব রিহার্সেল ছাড়া এককথায় অসম্ভব’ বলেও যোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন,’সভাস্থলের নিরাপত্তা বিধানকারী পুলিশ না জানলেও পূর্ব রিহার্সাল করার মতো পর্যাপ্ত সময় আগে থেকেই হামলাকারীরা জানতো যে মিটিংটা মুক্তাঙ্গনে নয়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পার্টি অফিসের সামনেই হবে। সেইভাবেই তারা নিখুঁত প্রস্তুতি, অতঃপর কার্য সম্পন্ন করে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী ও সমর্থক তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহার আকন্দের পরিচয় ইতোমধ্যে খানিকটা দেওয়া হয়েছে। তিনি চার্জশিট মহাকাব্য রচনায় সিদ্ধহস্ত বলেই তাকে ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলার দায়িত্ব যে দেওয়া হয়েছে। তিনি রঙধনুর রঙ মিশিয়ে কাল্পনিক রিপোর্ট তৈরি করতে দক্ষ, এর প্রমাণও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।’
২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলার তদন্তের দায়িত্বভার প্রদান করা একেবারেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘নির্দোষ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকে কাল্পনিক গল্প তৈরি করে ফাঁসানোই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। কাহার আকন্দ শেখ হাসিনার ইচ্ছাপূরণে সেই কাজটিই নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম জড়ানো সম্পূর্ণরুপে চক্রান্তমূলক ও সরকারপ্রধানের ক্রোধ ও ঈর্ষার ঝাল মেটানোরই বর্ধিত প্রকাশ।’
এসময় তিনি ওবায়দুল কাদেরের ‘গণমাধ্যমের একাংশ আওয়ামী লীগের প্রতি অবিচার করছে’ বক্তব্যের বিপরীতে বলেন, আমরা মনে করি অবিচার করছে না, বরং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর গুন্ডামী ও গোয়েন্দাগিরি সত্ত্বেও গণমাধ্যমের বিরাট অংশ সাহসের সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছে। তবে ক্ষুদ্র একটি অংশ যে পা চাটছে ও সুবিধার ঝোল খাচ্ছে তা জনগণ দেখছে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রতিক্রিয়ায় তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের গলায় দড়ি ঝোলাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের তৃপ্তি মিটছে না, তাই এখন গোটা গণমাধ্যমকেই পকেটে ঢোকানোর চেষ্টায় কিছুটা বেগ পাওয়াতে আফসোস করে নানা কথাবার্তা বলছেন।’