নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর মহাদেবপুরে এডিপি রাজস্ব খাতের কোটি কোটি টাকার আওয়াতায় টেন্ডারবাজি, প্রকল্পের অনিয়ম তদন্ত ও বিল পাশ না করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপূরে ঘন্টাব্যাপী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মাছ চত্ত্বর মোড়ে ‘মহাদেবপুর সচেতন নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে এ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।
‘মহাদেবপুর সচেতন নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে এই কর্মসূচী পালন করা হলেও নেপথ্যে রয়েছে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকার দলীয় আর্শীবাদপুষ্ট ঠিকাদার।
নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কুদরতী খুদা সোহাগে সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-আহবায়ক অনুকুল চন্দ্র সাহা বুদু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বাক কাওসার আলী, যুবলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজুসহ অন্যান্যেরা।
মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইউএনও জেবুন নাহার উপজেলার দায়িত্ব ভার নেওয়ার পর থেকেই নিয়মিত অফিস করেন না, প্রতিটি কাজের ফাইল পাশ করতে গেলে ৫ শতাংশ কমিশন চান। সর্বক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ কোন কাজে গেলে নানা রকম হয়রানীর স্বীকার হতে হয়। এ সকল বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন কাজ না হয়নি। ইউএনও যতদিন অপসারণ না হবে ততদিন পর্যন্ত অবরোধ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন চলতেই থাকবে। কর্মসূচীকালীন সময় মাছ চত্তর চারমাথায় বিশাল যানজটের সৃষ্টি হলে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির স্বীকার হয়।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ, প্রতি বছর এলজিডি, উপজেলা পরিষদসহ এডিপি রাজস্ব খাতের কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের টেন্ডার হয়। সেই টেন্ডারগুলো সরকারি দলীয় নেতার প্রভাবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রতি বছর মেসার্স তরফদার, মেসার্স উল্লাস, মেসার্স বিসমিল্লাহসহ হাতে গোনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পেয়ে থাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগও উঠেছে এলাকাবাসির মধ্যে। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার কঠোর হলে ফুঁসে উঠেছে সরকারি দলীয় নেতা-কর্মী ও টিন্ডারবাজ ঠিকাদাররা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার জানান, যাদের ইন্ধনে এই কর্মসূচী পালন করা হলো- তারা ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসের নিয়মিত ঠিকাদার। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের এডিপি রাজস্ব খাত থেকে যে সমস্ত প্রকল্পগুলো ছিল সেগুলোটেন্ডার পেয়েছে মেসার্স তরফদার, মেসার্স উল্লাস, মেসার্স বিসমিল্লাহসহ ৫টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এ সব প্রতিষ্ঠানের আওয়াতায় কোটি কোটি টাকার কাজ করা হলেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে কাজগুলো দেখার পর কাজের মানের সন্তোসজনক না হওয়া পুনরায় কাজ করতে বলা হয় এবং বিলটি বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু তারা প্রকল্পের সঠিক কাজ না করে বিল পাশ করে দিতে চাপ দেন। তাদের চাপের মূখে বিল পাশ না করে দেয়ায় এই কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
ঠিকাদারদের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি আরো বলেন, তিনি যোগদানের পর থেকে দেখে আসছেন- রহস্যজনক ভাবে গোনা ঠিকাদার এসব প্রতিষ্ঠান কিভাবে প্রতি বছর প্রায় প্রতিটি কাজ পেয়ে থাকে। সরকারি কাজে কোন অনিয়ম হতে দেয়া যাবে না। প্রকল্পের সঠিক কাজ করে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন ঠিকাদাররা। তার আগে একটি টাকারও পাশ হবে না।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম