নিজস্ব প্রতিবেদক:
পবিত্র রমজান মাসেও চালের বাজার অস্থির। লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলছে সব ধরনের চালের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তের আয়ের মানুষেরা। জীবন ধারণের জন্য দুবেলা-দু’মুঠো খাওয়ার জন্য মোটা চাল কিনতে হলেও কেজি প্রতি খরচ করতে হচ্ছে ৪৫ টাকার উপরে। রাজধানীর রামপুরা ও মেরাদিয়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা টাকা, পারিজা চাল ৪৫-৪৮, মিনিকেট একটু ভাল মানের ৫৬-৬০, মিনিকেট (সাধারণ) ৫২-৫৪, বিআর২৮ ৪৮-৫০ টাকায়, নাজিরশাইল ৫৪, একটু ভাল মানের নাজিরশাইল ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়, পাইজাম ৪৮-৫০, বাসমতি ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৭৬-৭৮, হাস্কি নাজির চাল ৪৫ এবং পোলাও চাল খোলা ১০০ থেকে ৮০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের চাল বিক্রেতা মাঈন উদ্দিন চালের দামের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজারে চালের সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি। এ বছর বৃষ্টিতে ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে হাওর অঞ্চলের মানুষ ধান ঘরেই তুলতেই পারেনি। এসব কারণে সরবাহে ঘাটতি থাকায় চালের দাম বাড়ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার চাল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। আমদানি শুরু হলে চালের দর কমতে পারে।’
রামপুরা বাজারে চাল কিনতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মামুনুর রশিদ জানান, গত ৮-১০ বছরে মোটা চালের দর এত বাড়েনি। অন্য বছর এ সময়টাতে মোটা চালের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কেনা যেত। কিন্তু চলতি বছর মোটা চাল কিনতে ৪৫ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে। আসলে যেভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে বাঁচতে পারবো তো?’
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে রসুনের। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া ভারতীয় রসুন ৬০ টাকা বেড়ে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হওয়া চায়না রসুন ৪০০-৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি রসুন ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে লবণের দাম কেজি প্রতি ২ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদি পণ্য বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ছোলা ৯৫ টাকা, মুগ ডাল ১৩৫ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ১২৫ টাকা, মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫ লিটারের ভোজ্য তেলের বোতল ব্র্যান্ড ভেদে ৫০০-৫১০ টাকা; প্রতি লিটার ভোজ্য তেল ১০০-১০৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দারুচিনি ৩৬০ টাকা, জিরা ৪৫০, শুকনা মরিচ ২০০, লবঙ্গ ১৫০০, এলাচ ১৬০০, চায়না আদা ১২০ এবং ক্যারালা আদা ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি টমেটো ৬০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০, শশা ৪৫-৫০, চাল কুমড়া ৪০-৫০, কচুর লতি ৬০, পটল ৬০, ঢেঁড়স ৬০, ঝিঙ্গা ৫০, চিচিঙ্গা ৫০, করলা ৫০, কাকরোল ৫০, আলু ১৮-২০, পেঁপে ৪০-৫০, কচুরমুখি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি পিছ ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৪৫ এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ১৫ টাকা, লালশাক ১৫, পুঁইশাক ২০ এবং লাউশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, হাইব্রিড কৈ মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৭০০ টাকা, আকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, প্রতিটি ইলিশ আকার ভেদে ৮০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি ৪৯০-৫২০ টাকার, খাসির মাংস ৭৩০-৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। এ ছাড়া লেয়ার মুরগি ১৮০, দেশি মুরগি ৪০০, পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ