বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক :
সারা বিশ্বের উদ্বেগের বিষয় এখন গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন। আর উষ্ণায়নের ফলে বিশ্বের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে তার ফলে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাবে এবং নানা ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্ব ক্রমে বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে। ফলে বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কমানোর কোনো বিকল্প নেই।
এ অবস্থায় গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড অপসারণপদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে কিছু প্রতিষ্ঠান। সুইজারল্যান্ডের ক্লাইমওয়ার্কস-ও এ ধরনের কম্পানি। এর আগেই ক্লাইমওয়ার্কস জার্মানির গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অডির সাথে মিলে আরেকটি জার্মান কম্পানি ‘সানফায়ারকে’ বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিয়ে জ্বালানি তৈরির পদ্ধতি বাতলে দিয়েছিল। সেই পদ্ধতি অনুসারে কার্বন মুক্ত ডিজেল জ্বালানি তৈরি সম্ভব হয়েছিল।এবার ক্লাইমওয়ার্কস আরেকটি নজিরবিহীন কাজ করছে। কম্পানিটি এখন বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে সার তৈরির কাজ শুরু করেছে। এ কাজটি তারা শুরু করেছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখের নিকটেই একটি কারখানায়। আর এ কাজটি তারা বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছে ৩১ মে থেকে।বায়ুমণ্ডল থেকে সংগ্রহ করা কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিয়ে যে সার তৈরি করা হবে তা গ্রিনহাউজে গাছপালাতে প্রয়োগ করা হবে। প্রতিষ্ঠানটি মোটেই ছোট আকারে এ কাজটি করছেনা। তাদের পরিকল্পনা রয়েছে এ প্রকল্প বড় আকারে নিয়ে যাওয়ার। এতে ২০২৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের এক শতাংশ কার্বন-ডাই-অক্সাইড সারে পরিণত করতে পারবে বলে আশা করছে। তবে এ জন্য প্রয়োজন হবে আড়াই লাখ প্ল্যান্ট। সাধারণত গাড়ি, ট্রাক, প্লেন ইত্যাদি থেকে কার্বন নিঃসরণ হয়, যা অপসারণ করা যাচ্ছে এ প্ল্যান্টের সহায়তায়। বর্তমানে ৬০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করে এসব যানবাহন। আর এই রিসাইকল সিস্টেমটিতে একই পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় গাছের তুলনায় বেশ কম জায়গার দরকার হবে। ফলে কার্বন সংরক্ষণের জন্য বিশাল বনভূমির প্রয়োজন হবে না।
যেসব স্থানে মানুষ বাস করে না এবং যেসব জায়গা কৃষি কাজে ব্যবহৃত হয় না, যেমন মরুভূমিতেও এই সিস্টেম সংস্থাপন করা যাবে। আবার শহরের ব্যস্ত স্থানেও এ প্ল্যান্ট স্থাপন করে কার্বন হ্রাস করা যাবে। ফলে কার্বন দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে জনবহুল শহরও।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ