নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ অস্তিত্ব রক্ষায় ৫ দফা জাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (২৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান। ‘অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামের তিন দশক’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ধর্মীয় রাষ্ট্র নয়, ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই’, ‘যার ধর্ম তার কাছে রাষ্ট্রের কী বলার আছে’, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, এসব স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা পথ চলে আসছি। আমাদের এ আন্দোলনের ভিত্তি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৭ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে অনেকেরই বিচ্যুতি ঘটছে। কিন্তু আমাদের এ সংগঠন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে আঁকড়ে ধরে আছে।’
অনুষ্ঠানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- কোনও রাজনৈতিক দল বা জোট আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে এমন কাউকে মনোনয়ন দেবে না যারা অতীতে বা বর্তমানে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে বা রাজনৈতিক নেতৃত্বে থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী, স্বার্থবিরোধী কোনও প্রকার কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বা আছেন, এমন কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী দেয়া হলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যেসব নির্বাচনী এলাকায় তাদের ভোটদানে বিরত থাকবে বা ভোট বর্জন করবে।
আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণসহ জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, নির্বাচনের পূর্বাপর ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় সব উপাসনালয়কে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার, নির্বাচনী সভাগুলোতে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান বা কোনোরূপ প্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি তা ভঙ্গের দায়ে সরাসরি প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ তাকে এক বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী আইনের যুগোপযোগী সংস্কার করতে হবে। নির্বাচনের আগেই সরকারকে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন, বর্ণবৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন এবং পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের বাস্তবায়নসহ পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জি এম কাদের প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ