নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোজার জন্য সাহরি খাওয়া সুন্নত ও সওয়াবের কাজ। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ বলেছেন, তোমরা সেহরি খাবে, এতে অনেক বরকত আছে।
১. পেট পুরে সেহরি খাওয়া জরুরি নয়, দুই বা এক লোকমা অথবা খেজুরের টুকরা কিংবা দু’চার দানা খেলেও যথেষ্ট।
২. সুবহে সাদিকের আগে রাতের শেষভাগে সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব।
৩. যদি সেহরি খেতে বিলম্ব হয়ে যায় এবং প্রবল ধারণা হয় যে, ভোর হওয়ার পর কিছু পানাহার করেছেন, তবে এ অবস্থায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার ত্যাগ করা এবং পরে ওই রোজা কাজা করা ওয়াজিব। (সূত্র: বেহেশতি জেওর: খ- ৩)
ইসলামী শরিয়ার আলোকে রোজা শুরু হয় সুবহে সাদিক থেকে। তাই সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহারে কোনো আপত্তি নেই। সব কিছুই তখন বৈধ। অনেকে রাতের শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে সাহরি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং মনে করেন, রোজার নিয়ত করার পর বা সাহরি খেয়ে ফেলার পর আর কিছু পানাহার করা যাবে না। এমন ধারণা সঠিক নয়। সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহার করতে কোনো দোষ নেই। তা নিয়ত করা হোক বা না হোক। (সূত্র: বেহেশতি জেওর, খ- ৩, পৃষ্ঠা ৩)
সাহরির সময় কোনো ব্যক্তি এতো পরিমাণ খেয়েছেন যে, সূর্যোদয়ের পর তার মধ্যে ঢেকুর আসতে শুরু করে। সঙ্গে পানিও বের হয়। এর মাধ্যমে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। (সূত্র : ফাতাওয়া রশিদিয়া, পৃষ্ঠা ৩৭১)
সাহরি খাওয়া সুন্নত, এটি রোজার অংশ নয়। সাহরি না খেলেও রোজা হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমদ ২/৩৭৭; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৬৯৭)
আর রমজান মাসে কোনো কারণে রাতে নিয়ত করতে না পারলে এবং সুবহে সাদিকের পর থেকে রোজা ভঙের কোনো কারণ পাওয়া না গেলে দুপুরের আগ (অর্থাৎ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের আগ) পর্যন্ত নিয়ত করার সুযোগ থাকে। তবে রাতে নিয়ত করে নেওয়াই উত্তম।
(শরহু মুখতাসারিত তহাবি ২/৪০৪; কিতাবুল আছার ২/২২৬; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/২২৯)
সুবহে সাদিক হয়ে গেছে জানা সত্ত্বেও আযান শোনা যায়নি বা এখনো ভালোভাবে আলো ছড়ায়নি এ ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে খানাপিনা করা বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হওয়া হারাম। এতে রোজা সহিহ হবে না। আর যদি রোজার নিয়ত করার পর কেউ এমনটি করে থাকেন তাহলে কাযা-কাফফারা দু’টোই জরুরি হবে। (সূরা বাকারা: ১৮৭; মাআরিফুল কুরআন ১/৪৫৪-৪৫৫)
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

