আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু সমঝোতা চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিশ্রুত ভঙ্গকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে ইরান। তবে এ চুক্তিকে আগের মতোই টিকিয়ে রাখার পক্ষে রয়েছে বাকি পাঁচ দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও চীন।
তবে এই পাঁচ দেশ তাদের কথা না রাখলে ইরানও এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। বুধবার পার্লামেন্টে এই কথা বলেন তিনি।
এদিন পার্লামেন্ট সদস্যরা মার্কিনবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। আর পার্লামেন্টেই মার্কিন পতাকা পুড়িয়েছেন তারা। এ সময় চু্ক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে খামেনি বলেন, ‘আমেরিকা সরে যাওয়া সত্ত্বেও ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অটুট থাকবে— বাকি দেশগুলো যদি এই নিশ্চয়তা না দেয়, তা হলে ২০১৫ সালের ওই চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে যাবে তেহরানও।’
ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি ইরানের অনাস্থার কথা জানিয়ে খামেনি বলেন, ‘ইউরোপের তিন দেশ বলেছে এই চুক্তি আগের মতোই কার্যকর থাকবে। এই তিন দেশের উপরে (ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি) আমার ভরসা নেই। ভরসা না পেলে আমরাও বেরিয়ে যাব।’ মঙ্গলবার ট্রাম্পের ঘোষণার পরই রাষ্ট্রীয় বার্তা প্রদান করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি আমেরিকাকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী হিসেবে উল্লেখ করেন। সেসময় তিনি চুক্তিতে থাকা বাকি দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা শুরুর কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চুক্তিতে সই করা তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তকে ‘বড় ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন। সে চুক্তির মূল বিষয় ছিল, ইরান পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের যেকোনো পরমাণু স্থাপনায় যেকোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। অর্থাৎ ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানকে নজরদারির মধ্যে রাখতে পারবে। এর বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়া হয়েছিল।
তবে শুরু থেকেই এ চুক্তিকে একপেশে বলে মন্তব্য করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার দলিলেও সই করেছেন ট্রাম্প।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি