২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৩৭

সঙ্গীতের জন্মভূমি সম্ভবত সিরিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আসলে গানের জন্ম কবে, এই প্রশ্নের জবাব দেওয়া কিংবা পাওয়া কঠিন। তবে সিরিয়ায় যেসব উপকরণের সন্ধান মিলেছে, তা থেকে প্রত্মতাত্ত্বিকরা বলেছেন, সঙ্গীতের জন্মভূমি সম্ভবত সিরিয়া। বর্তমানে যুদ্ধবিধবস্ত দেশটি থেকে সন্ধান মিলেছে সঙ্গীত সম্পর্কিত অসংখ্য নিদর্শন যেগুলো হাজার হাজার বছর আগের। সেদেশে বহু ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্টি বসবাস করে। ফলে সঙ্গীতও অসংখ্য ধারায় বিভক্ত।
১৯৫০ এর দশকে সিরিয়ায় সঙ্গীত সংক্রান্ত ২৯ টি বিরল নিদর্শন পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এগুলো ৩ হাজার ৪০০ বছরের পুরনো। এদের একটি হচ্ছে মাটির খন্ডের উপর সঙ্গীতের সুরলিপি অঙ্কন করা। অনেকটা আধুনিক যুগের সুরলিপির মতোই। এগুলো খন্ড বিখন্ড অবস্থায় থাকায় প্রত্নতত্ববিদরা প্রায় ২০ বছর চেষ্টার পর সেগুলো জোড়া লাগিয়ে মোটামুটি একটি গানের পূর্ণ লিপি বের করতে সক্ষম হন। তবে এর ভাষা ছিল খুব দুর্বোধ্য। এখনো পর্যন্ত এটিই হচ্ছে পৃথিবীর প্রাচীনতম স্বরলিপির নিদর্শন। এটি নিয়েই গবেষণা এগিয়ে চলেছে। গানের যে কথা এতে লেখা আছে তার অর্থ বের করার জন্য নিরন্তর গবেষণা চলছে। আর যে সুরলিপি পাওয়া গেছে তা বাস্তবে গাওয়া হলে কেমন শোনাতো সেটা বের করার চেষ্টা করছেন তারা।
গবেষক দলের একজন হচ্ছেন ইরাকের ব্যাবিলন ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্বের অধ্যাপক রিচার্ড ডামব্রিল। তিনি বিবিসিকে বলেন, যে সংকেতে গানের কথা লেখা আছে সে সংকেতগুলোর মান আমরা বের করতে পেরেছি। কিন্তু সেগুলোর সুর কেমন তা বের করতে গলদঘর্ম হচ্ছি। সেটি করা সম্ভব হলে পৃথিবীর ‘প্রাচীনতম’ সঙ্গীতটি কেমন ছিল সেটা জানতে পারবে বিশ্ববাসি। তিনি বলেন, আমি নিজেও অনেক বছর ধরে চেষ্টা করে সিরিয়ার সঙ্গীতের কিছু নিদর্শন থেকে গানের কথা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, অনেকের ধারণা হতে পারে হাজার হাজার বছর আগে কেবল ধর্মীয় গানই গাওয়া হতো। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়! একটি গানের কথায় দেখা গেছে একজন বার গার্ল তার খরিদ্দারদের উদ্দেশে গান গাইছে। তবে সেই গানের পুরো অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আরেকটি গানের কথায় দেখা যায় একজন নারী কেন তার সন্তান হচ্ছে না তা নিয়ে গান গাইছেন। তার ধারণা তিনি হয়তো কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, একারণে সৃষ্টিকর্তা রুষ্ট হয়ে তাকে মাতৃত্ব থেকে বঞ্চিত করেছেন। এরকম আরো অদ্ভুত অদ্ভুত থিমের উপর গান রচিত হতো তখন।
কেবল গান নয়, গানের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক বাদ্যযন্ত্রের নিদর্শনও পাওয়া গেছে সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে। গবেষণায় দেখা গেছে এগুলোও কমপক্ষে ৩/৪ হাজার বছর আগেরকার। ড্রামবিল বলেছেন, মানুষ জাতির প্রথম গানটি সিরিয়ায় উদ্ভব হয়েছিল কি না তা নিয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে। -বিবিসি

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :মে ৯, ২০১৮ ১:০৩ অপরাহ্ণ