নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের বিভিন্ন স্থানে আাজ সোমবার বজ্রপাতে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শেরপুরে চারজন, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে দুইজন করে এবং ময়মনসিংহে একজন প্রাণ হারিয়েছেন।
হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বজ্রপাতে ধানকাটা দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বৃন্দা চিত্তা হাওরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন দৌলতপুর ইউনিয়নের কবিরপুর গ্রামের প্রয়াত নাদু বৈষ্ণবের ছেলে অধীর বৈষ্ণব (২৭) ও তেলঘরি গ্রামের বীরেশ্বর বৈষ্ণবের ছেলে বসু বৈষ্ণব (৩২)।
বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান জানান, সকালে বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছিল। ওই সময় বৃন্দা চিত্তা হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হয় তিন শ্রমিক, যাদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত অবস্থায় দু’জনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর আরেকজনের মৃত্যু হয়। আহত আরেকজন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন খন্দকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে।
শেরপুরঃ জেলার পৃথকস্থানে আজ সোমবার সকালে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রী ও কৃষিশ্রমিকসহ চারজন নিহত হয়েছেন। সকাল আটটার দিকে জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী শারমিন বজ্রপাতে নিহত হয়। সে হালুয়াঘাট উপজেলার পাঘারিয়া গ্রামের সোহেল মিয়ার মেয়ে।
নিহতের পরিবার জানায়, প্রাইভেট পড়ে বাড়িতে ফেরার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয় শারমিন। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়াও সকাল ১১ টার দিকে শেরপুর সদর উপজেলার হালগড়া গ্রামে আব্দুর রহিম নামে এক কৃষক মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে নিহত হন। তিনি ওই গ্রামের আকু শেখের ছেলে। শেরপুর সদর উপজেলার ইউএনও হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সকাল নয়টার দিকে জেলার নকলা উপজেলার মোজারচর গ্রামে শহিদুল ইসলাম (৩০) নামে এক যুবক মাঠ থেকে কাটা ধান নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে নিহত হন। তিনি বানেশ্বরদী ইউনিয়নের মোজারচর গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে। এ সময় বজ্রপাতে এক কৃষি শ্রমিকের শরীর ঝলসে যায়।
অন্যদিকে জেলার শ্রীবরদী উপজেলার বকচর গ্রামে সকাল ১১ টার দিকে কুব্বত আলী নামে এক কৃষক ধান কাটার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক (আরএমও) মো. আনিসুর রহমান তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে একইদিনে নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় গ্রামে বজ্রপাতে এক কৃষকের দু’টি গরু মারা গেছে।
ময়মনসিংহ : জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায় সোমবার (৭ মে) সকালে বজ্রপাতে শারমিন আক্তার (১৬) নামের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের রুহিপাগারিয়া গ্রামের মো. সোহেল মিয়ার মেয়ে। সেখানকার নিচপাড়া এসইএসডিপি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে ছাত্রী ছিল।
তার পরিবার ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, সকালে প্রাইভেট পড়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে বাসায় ফিরছিল শারমিন। সকাল নয়টার দিকে বাড়ির কাছে পৌঁছালে বজ্রপাতে আহত হয়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিচপাড়া এসইএসডিপি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু নোমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মৌলভীবাজার : জেলার শ্রীমঙ্গলে হাইল হাওরে বজ্রপাতে মফিজ মিয়া (২৮) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ সময় রশীদ মিয়া (৩৬) ও মো. রফিক মিয়া (৬০) নামের দুজন গুরুতর আহত হন। নিহত মফিজ পেশায় জেলে ছিলেন। তার বাড়ি উপজেলার বরুণা গ্রামে। আহত রশীদ ও রফিক পেশায় কৃষক।
উপজেলার কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দৈনিক দেশজনতা/ এন আর