রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ট্রলিব্যাগে তরুণীর খণ্ডিত লাশের পরিচয় মেলেনি ১৬ দিনেও। এমনকি এ হত্যাকাণ্ডের কারণ ও জড়িতদের খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ নিয়েও আসেনি। ফলে কুলেস এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি শূূন্য। পুলিশ বলছে, তদন্ত চলছে। রহস্য উদঘাটনে সময়ের প্রয়োজন।
গত ১১ এপ্রিল বুধবার সকালে যাত্রাবাড়ী থানার অদূরে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের কুতুবখালি প্রান্তের টোল প্লাজার পাশে একটি দোকানের সামনে থেকে ট্রলিব্যাগটি উদ্ধার করে পুলিশ। সকালে দোকানের সামনে একটি ট্রলিব্যাগ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও ব্যাগটির মালিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আস্তে আস্তে লোকজনও জড়ো হয়ে যায় ব্যাগটিকে ঘিরে। মালিক না পেয়ে, খবর দেয়া হয় পুলিশে। পুলিশ গিয়ে ট্রলিব্যাগটি খুলে দেখতে পায় পেট থেকে দুই পা পর্যন্ত খণ্ডিত লাশের অংশ। পুলিশের ধারণা, ওই তরুণীর বয়স আনুমানিক ২০ বছর। তবে লাশটির বাকি অংশ খুঁজে পায়নি পুলিশ।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আজিজুর রহমান বলেন, ওই তরুণীর লাশের ওপরের অংশ পাওয়া যায়নি। কোনো পোশাকও ছিল না। কেউ থানায় এসেও অভিযোগ করেনি। তাই কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এখনো বলার মতো কিছু পাওয়া যায়নি। এসব হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে তদন্তে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। আশা করছি, এ হত্যার রহস্য উন্মোচন করা যাবে।
পুলিশ বলছে, নিহত ওই তরুণী সম্ভবত অন্য কোনো এলাকার। হত্যার পর ব্যাগে ভরে কোনো গাড়িতে এনে লাশের খণ্ডাংশ রেখে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ফারুক বলেন, যে ব্যাগটি ছিল, তা ভ্রমণের সময় ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের ব্যাগ বহন করলে কারও সন্দেহ হওয়ার কথা নয়। ব্যাগটি কুতুবখালী রাস্তার দক্ষিণপাশে ছিল। এখানে সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাস থেকে মানুষ নামে। এ থেকে ফারুকের ধারণা, অন্য কোথাও হত্যার পর লাশের খণ্ডাংশ মহাসড়কের পাশে এনে ফেলা হয়।
ডেমরা জোনের সিনিয়র এসি ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, যেহেতু তরুণীর মুখমণ্ডলের অংশটুকু পাওয়া যায়নি, তাই তার পরিচয় শনাক্ত করাও সম্ভব হয়নি। আমরা লাশের বাকি অংশ খুঁজছি এবং নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। পরিচয় পাওয়া গেলে হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যাবে। তবে হত্যাকারীকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। তিনি বলেন, পুলিশ বসে নেই, প্রতিদিন ফলোআপ করছি- দেহের বাকি অংশ দেশের কোথাও পাওয়া গেল কি না। সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মেসেজ দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল রাতে সবুজবাগে সুটকেসের ভেতর থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশটি জনশক্তি রফতানিকারক শাহ আলমের বলে পরিচয় শনাক্ত হয়।
নিহতের জামাতা আশিক জানান, গত রোববার বিকেলে একটি ফোন পেয়ে বাসা থেকে বেড় হয়ে যান শাহ আলম। এরপর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে লাশ শনাক্ত করা হয়।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ