নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত পণ্য বিড়ি, জর্দা ও গুলের ওপর শুল্ক কর বাড়ানো হবে। তবে চোরাচালান বাড়ার আশংকায় সিগারেট উৎপাদন বন্ধে বাজেটে কোন নির্দেশনা থাকছে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, “বিদেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় হাতে করে সিগারেট আনা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি বিড়ি, জর্দা ও গুলের ওপর কর বাড়ানো হবে।”
তিনি বলেন, তামাকজাত পণ্য নিরুৎসাহিত করার জন্য সিগারেটের ওপর উচ্চকর বসানো হয়েছে। এরপরও সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছে। একই সঙ্গে লক্ষ করা গেছে ইয়াবা সেবনকারী সংখ্যাও বাড়ছে।
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সিগারেট উৎপাদন বন্ধ করা যাবে না। কারণ বন্ধ হলে চোরাচালান পথে সিগারেট আসবে। এছাড়া মানুষ অন্য নেশায় যাবে। তাই উৎসাহিত নয় বরং চোরাচালান রোধে এটি চালু রাখা হবে। আমরা চেষ্টা করবো কোনভাবেই যাতে সিগারেটের চোরাচালান না হয়। মানুষ যেন অন্য ক্ষতিকর নেশায় না ঝুঁকে। তবে নিম্ন শ্রেণির মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে আমাদের বিশেষ নজর থাকবে।”
প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর চেয়ারম্যান গোলাম মাঈন উদ্দিন বলেন, “দিন দিন চোরাইভাবে সিগারেট আসার প্রবণতা বাড়ছে। এঅবস্থা চলতে দেয়া যায় না। এটি রোধে সিগারেটে উচ্চকর কমাতে হবে। এরপরও যদি সিগারেটে সারচার্জ বসে তাহলে আমাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হবে।
সিগারেটের ওপর থেকে সারচার্জ কমানোর বিবেচনাসহ সিগারেটের স্ল্যাব পরিবর্তনের দাবি রাখেন তিনি।
বিএটিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনির বলেন, “তামাকের বাজার এখন হাই গ্রেড থেকে লো গ্রেডে চলে গেছে। অথচ উচ্চ গ্রেডেই কর বেশি। ফলে সরকার গত ১১ বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। সংগঠনটির পক্ষে উচ্চ গ্রেডে কর কমানোসহ নিম্ন গ্রেডে কর বাড়ানোর দাবি রাখছি।”
এসময় বাংলাদেশ মুদ্রন শিল্প সমিতি ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কার্যাদেশ প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে কম শুল্কে কাগজ আমদানীর সুযোগ দাবি রাখেন তিনি।
সংগঠনটির চেয়ারম্যান তোফায়েল খান বলেন বলেন, “দেশে সরকার বছরে ৩৬ কোটি বই ফ্রি বিতরণ করে। তার পুরোটাই আমরা করে থাকি। এছাড়া বেসরকারি খাতের প্রায় ২০০ কোটি বই তৈরি করছি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে বিদেশিদের প্রভাবে আমরা অনেক জায়গায় মার খাচ্ছি। আমাদের সামনে আরও সুষ্ঠ বিকাশে এনবিআরের সহায়তা চাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে ৭ হাজার প্রিন্টিং প্রেস রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধিত হয়ে ভ্যাট অধীনে রয়েছে ১২শত প্রিন্টিং প্রেস। বাকীগুলো অনিবন্ধিত মানে তারা সবাই ভ্যাট দিচ্ছে না। তাই রাজস্ব আদায়ের লক্ষে এগুলোকে ভ্যাটের আওতায় আনতে হবে।
তার এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “বিষয়েটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।”
করের বাইরে ফেসবুক-গুগল রয়েছে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “এগুলো বিদেশি কোম্পানি। আমাদের দেশে তাদের কোনো অফিস নাই। তাই ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি কর আরোপ করা যাচ্ছে না। তবে তাদেরকে করের আওতায় আনতে কোম্পানির বিজ্ঞাপন দাতাদের ওপর কর বসানো হবে।
দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলোর দাপট বেশি উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, “বিদেশিদের প্রভাবে দেশি চ্যানেলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে। এটা একটা নিয়মে আনা জরুরি। এদের দাপট কমাতে ক্যাবল অপারেটদের সম্পর্কে জানতে চেয়ে বিষয়টি রাজস্ব কর্মকর্তারদের নজরে আনার পরামর্শ দেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ