মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, জনগণ মনে করে দেশের সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি বর্তমান মহাজোট সরকার। ভোটারবিহীন অগণতান্ত্রিক শক্তি হচ্ছে সবচাইতে নিকৃষ্ট অশুভ শক্তি। মানুষ দিন গুনছে এই অশুভ শক্তি পতনের, তাদের থেকে রেহাই পাওয়ার।
রিজভী আহমেদ প্রশ্ন তুলে বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বৈরাচারীরা কী শুভ শক্তি? অনাগত দিনের দুঃশ্চিন্তা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ঘনায়মান হতাশা আর বিরোধীদের গুম, খুন, অদৃশ্য করা, হাত-পায়ের নখ তুলে মেরে ফেলা, হাঁটুতে গুলি করে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করা ইত্যাদি পরিস্থিতিতে দেশের বিরাট জনগোষ্ঠী প্রাণখুলে হাসতে পর্যন্ত ভুলে গেছে, এই পরিস্থিতি কী কোনো শুভ শক্তির লক্ষণ?
আজ রোববার বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
রিজভী আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, জনগণের সমস্ত মৌলিক ও মানবাধিকার কেড়ে নিয়ে, নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে সম্পূর্ণ বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছেন এটা কী শুভ শক্তির পরিচয় বহন করে?
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলামসহ অন্যরা।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ দাবি করেছেন, দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ। তিনি অসুস্থ হলেও এখন পর্যন্ত তাঁকে কোনো চিকিৎসাই দেয়া হচ্ছে না।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকারি মেডিকেল বোর্ড মামুলি প্রহসনের এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষা করে বেগম খালেদা জিয়ার ফিজিওথেরাপির সুপারিশ করেছে। বেগম খালেদা জিয়া একজন বয়স্ক ও দেশের জনপ্রিয় নেত্রী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাঁটু ও চোখের সমস্যায় ভুগছেন। কারাগারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখায় তাঁর আরও বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রিজভী বলেন, সরকারি মেডিকেল বোর্ড বলেছে, বেগম খালেদা জিয়ার এক্স-রে রিপোর্টগুলোয় দেখা যাচ্ছে, তাঁর ঘাড় এবং কোমরের হাড়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় এমআরআইসহ উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া শুধু এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁর সুনির্দিষ্ট ও সঠিক রোগ নির্ণয় সম্ভব নয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যেদিন হাসপাতালে আনা হয়েছিল, সেদিন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের ডাকা হলেও তাঁদের চিকিৎসা সেবা করার সুযোগ দেয়া হয়নি। পরামর্শও নেয়া হয়নি।
রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার জন্যই তাঁকে পরিকল্পিতভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করা হয়েছে। এখন তাঁকে চিকিৎসার সুযোগও দেয়া হচ্ছে না।
কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের দেখা করতে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
বিএনপির এই নেতা বলেন, চক্রান্ত বাদ দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। তাঁর চিকিৎসা কিসে ভালো হয়, সেটি তাঁকে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিন। বেগম খালেদা জিয়ার ইচ্ছানুযায়ী তাঁর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করারও দাবি রিজভীর।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ফেব্রæয়ারিতে বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেন বিশেষ আদালত। এর পর থেকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যাক্ত করা পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে তাঁকে সেখানে রাখা হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর