স্বাস্থ্য ডেস্ক:
আমাদের দেশে এই সময়টাকেই বলা হয়ে থাকে ফলের মৌসুম। সারা বছর নানা ধরনের ফল পাওয়া গেলেও এই সময় সবচাইতে বেশি ও ভিন্ন জাতের ফল পাওয়া যায়। আর তার মাঝে সবচাইতে বেশি সাড়া ফেলে লিচু। লিছু বাজারে আসেও খুব অল্প সময়ের জন্য। তবে এর স্বাদের জন্য অন্য সব ফলের স্বাদকে পেছনে ফেলে দেয়। তবে শুধু রসালো আর মজাদার লিছু খেলেই হবে না। জেনে নিতে হবে এর স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কেও। তাহলে আসুন আজ আমরা জেনে নিই এই মজাদার ফলটি আমাদের কী কী উপকার করে থাকে।
. লিচুতে রয়েছে ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুর ৬৬ ভাগই হলো ক্যালরি।
. এটি শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। খাদ্য হজমকারী আঁশ, ভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে জমা করে।
. লিচুতে রয়েছে অলিগোনল নামের এক ধরনের উপাদান। একে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লুয়েঞ্জা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ উপাদান রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে, ত্বকে ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমায়।
. লিচু ক্যান্সার থেকে মানবদেহকে দেয় সুরক্ষা। এটি ক্যান্সার তৈরিকারী কোষ ধ্বংস করে। এতে অবস্থিত ফ্ল্যাভনয়িডস বা ভিটামিন ‘পি’ স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
. শরীর সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন ‘সি’ অপরিহার্য। লিচুতে এ ভিটামিন রয়েছে প্রচুর; যা ত্বক, হাড় এবং কোষের সজীবতা রক্ষা করে। হৃদরোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে ভিটামিন ‘সি’ অব্যর্থ বলেই বিবেচিত।
. ভিটামিন ‘বি’-এর মজুতঘর হিসেবে লিচুকে ধরা হয়। থিয়ামিন, নিয়াসিন নামের ভিটামিনগুলো লিচুকে করেছে আরো বেশি কার্যকর। এসব ভিটামিন শরীরের বিপাক ক্ষমতা বাড়ায়।
. এতে অবস্থিত পটাসিয়াম এবং খনিজের মতো উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
. স্বাদ আর গন্ধে অতুলনীয় লিচুতে রয়েছে প্রচুর পানি। যার ফলে প্রচণ্ড গরমের সময় লিচু খেলে শরীরে পানির ঘাটতি কিছুটা হলেও দূর হয়। তাছাড়া মিষ্টি এবং সুস্বাদু লিচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘সি’।
. লিচুতে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান, বিশেষ করে নারীদের স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। তাই নারীদের জন্য বিশেষ উপযোগী ফল এটি। এছাড়াও লিচুতে রয়েছে যথেষ্ট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
. লিচুতে প্রচুর ফাইবার এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে। যা মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মেটাবলিজম শক্তি কম হলেই মানুষের দেহে চর্বি বেড়ে যায়। লিচু এই মেটাবলিজম বৃদ্ধিতে দারুণ ভূমিকা পালন করে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ওজন হ্রাসে সাহায্য করে।
. সময়ের সাথে মানুষ বৃদ্ধ হয় স্বাভাবিক। কিন্তু বর্তমানে দূষণ, কালো ধোঁয়া, ভেজাল খাদ্যসহ আরো নানা কারণে মানুষ খুব দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে। মুখে বয়সের ছাপ আসার যে প্রধান কারণ তা আমাদের শরীরে উৎপন্ন হওয়া ফ্রি রেডিকেল। এই ফ্রি রেডিকেল রোধ করতে সবচেয়ে কর্মক্ষম হচ্ছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল খান তাদের চেহারায় বয়সের ছাপ কম পড়ে। লিচুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
দৈনিকদেশজনতা / আই সি