স্পোর্টস ডেস্ক:
আগের দিন বার্সেলোনার বিপক্ষে রূপকথার গল্পের জন্ম দিয়েছে এএস রোমা। তার রেশ না কাটতেই আরেকটি অসাধারণ গল্প লিখছিল জুভেন্টাস। তবে তাতে রঙ তুলির শেষ আঁচড় দিতে পারেনি ইতালির ক্লাবটি। এতে রিয়াল মাদ্রিদের কানের পাশ দিয়েই চলে গেল গুলিটা। যোগ করা সময়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর একমাত্র গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে দলটি।
সেমিফাইনালের টিকিট পেতে হলে কী করতে হতো তা ভালোভাবেই জানা ছিল জুভেন্টাসের। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তারা শুরুও করে দুর্দান্ত। ২ মিনিটে সামি খেদিরার ক্রস থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করে দলকে লিড এনে দেন মারিও মানজুকিচ। এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাসে জ্বালানি পায় জুভেন্টাস। একের পর এক আক্রমণ শাণায় তারা। তাদের সামলাতে সেরাটা বের হয়ে আসে রিয়ালের। ফলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। সুযোগও পায় স্বাগতিকরা। ১৩ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে জালে বল পাঠান ইসকো। তবে অফসাইডের কারণে তা বাতিল ঘোষণা করেন রেফারি।
এর পর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে এগিয়ে চলে খেলা। ফের এগিয়ে যায় অতিথিরা। ৩৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সেই মানজুকিচ। এটি তার আগের গোলেরই কপি। এবার স্টেফান লিশ্টস্টাইনারের ক্রসে হেডে নিশানাভেদ করেন তিনি। এতে ঘরে দাঁড়ানোর গল্প নতুন মোড় নেয়। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে গোল পেতে মরিয়া হয়ে পড়ে রিয়াল। রোটেশন নীতিতে পরিবর্তন আনেন কোচ জিনেদিন জিদান। গ্যারেথ বেল ও কাসেমিরোকে আর মাঠেই নামাননি তিনি। তাদের পরিবর্তে নামান লুকাস ভাসকেজও মার্কো অ্যাসেনসিওকে। এতে খেলার গতিও বাড়ে। ৫৮ মিনিটে সুযোগ পায় তারা। তবে চীনের প্রাচীর হয়ে রোনাল্ডোর শট রুখে দেন জিয়ানলুইজি বুফন।
পাল্টা আক্রমণে হিগুয়েইনের শট একইভাবে ঝাঁপিয়ে ঠেকান কাইলর নাভাস। কিন্তু ৬০ মিনিটে আর গোলবার সামলাতে পারেননি তিনি। গোল করে অতিথিদের ব্যবধান ৩-০ করেন ব্লেইস মাতুইদি। এতে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ৩-৩ হলে ভীষণ চাপে পড়ে রিয়াল। একটি গোল পেতে প্রতিপক্ষের ওপর হামলে পড়ে দলটি। অবশেষে তা আলোর মুখ দেখে যোগ করা সময়ে। এবারও লস ব্লাঙ্কোজদের ত্রাতা সিআর সেভেন। গোলমুখে ভাসকেজকে বেনাতিয়া ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে বল জালে জড়িয়ে সমর্থকদের আনন্দে ভাসান তিনি।
রেফারির এ সিদ্ধান্তে বাগড়া বাধান গোলরক্ষক বুফন। মাঠে সর্ব ক্ষমতার অধিকারীর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন তিনি। এতে মাঠ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। এ নিয়ে ইউরোপসেরা টুর্নামেন্টের চলতি আসরে টানা ১১ ম্যাচে গোল করলেন রোনাল্ডো। সব মিলিয়ে পর্তুগিজ এই ফরোয়ার্ডের গোল ১২০টি। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে জেতে জুভেন্টাসই। তবে দুই পর্ব মিলিয়ে ৪-৩ গোলের অগ্রগামিতায় সেমিতে উঠেছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। একরকম অল্পের জন্যই কানের পাশ দিয়ে গুলিটা চলে গেছে। এ নিয়ে টানা আটবার চ্যাম্পিয়ন লিগের শেষ চারে উঠল রেকর্ড ১২বারের শিরোপাজয়ীরা।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি